10/14/2025 ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই, উপদেষ্টা অনেকের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ: গোলাম পরওয়ার
মুনা নিউজ ডেস্ক
১০ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১৩
জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তনসহ পাঁচ দাবিতে আজ শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের পর মিছিল করে
জাতীয় নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’ নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদেরও দায়ী করেছেন তিনি।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে গণমিছিলের আগে এক সমাবেশে বক্তব্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গোলাম পরওয়ার। পাঁচ দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, কোনো বিশেষ দলের প্রতি দুর্বল হয়ে, কারও চাপে মাথা নত করে প্রশাসনে কোনো দলের পছন্দের লোককে বেছে বেছে পদায়ন করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ওসি, ডিসি, ইউএনও, আমলা, এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেকের ভূমিকা এখনো জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ।উপদেষ্টাদের মধ্যে কাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ, সে নাম প্রকাশ করেননি মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে ছোট-বড় সব দল যেন সমান সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এখন জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার আছে। কিন্তু দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলের ঘোষিত কর্মসূচি সম্পর্কে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অধিকার কারও নেই।’
১৫ অক্টোবর জুলাই সনদে স্বাক্ষরের আগে পিআর পদ্ধতির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান পরওয়ার।
যেসব সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি গণভোটের মধ্যে পিআর প্রস্তাবও যুক্ত রাখার দাবি জানান তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতির পক্ষে মতামত দেয়, সব দলকে সেটা মানতে হবে। জনগণ বিপক্ষে মত দিলে জামায়াত পিআরের দাবি থেকে সরে আসবে।
জাতীয় ঐক্য তৈরির স্বার্থে জামায়াত ‘বেশ কিছু’ সংস্কার প্রস্তাবে ছাড় দিয়েছে দাবি করে পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্বপ্ন পূরণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থে যেন ঐক্যের প্রচেষ্টায় বিঘ্ন না ঘটে।’
‘ফ্যাসিস্ট’ আওয়ামী লীগের মতো ১৪–দলীয় জোটভুক্ত সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিও জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল, যাঁর দলকে গত বছর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর জামায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন কোনো দলের নাম না ধরে বলেন, ‘অনেকে দ্রুত নির্বাচন চান, কিন্তু সংস্কারে সহযোগিতা করেন না। জনগণের দাবিকে তাঁরা তোয়াক্কা করেন না। আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, কোথায় কী নাড়াচাড়া হচ্ছে, এর খবর আমাদের কাছেও আছে। যারা জুলাই বিপ্লবের বিপক্ষে এবং আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলকে রক্ষা করার কথা ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বলে, তারা ভারতের দালাল। এই দালালদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আরেকটি বিপ্লব করতে জামায়াত প্রস্তুত আছে।’
১৫ নভেম্বরের মধ্যে গণভোট এবং আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের অন্দরমহল বা রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে যদি নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যারা চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত, বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদও বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কাকরাইলে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে স্লোগান ছিল ‘এই মুহূর্তে দরকার, পিআর আর সংস্কার’, ‘অবিলম্বে গণভোট, দিতে হবে, দিয়ে দাও’, ‘জামায়াতের ৫ দফা মানতে হবে, মেনে নাও’, ‘পিআর ছাড়া নির্বাচন, মানি না, মানব না’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, পিআর, বিচার, সংস্কার’ ইত্যাদি।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.