10/14/2025 পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে চুক্তির নির্দেশ
মুনা নিউজ ডেস্ক
৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর নামে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা দেবে।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়। সভায় ৩২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ওমর ফারুক খান বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ল’-ফার্ম ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠান (মোট ১২টি) এনগেজ করলে তারা টাকাগুলো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারবে। কিছু ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে; একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে এবং বাইরের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এগ্রিমেন্ট করা হবে। এরপর দেখা হবে সেই টাকা কীভাবে ডিপোজিট করা সম্ভব।’
ওমর ফারুক আরও বলেন, স্পেশাল সিআইডি প্রাথমিকভাবে মোট ১১টি স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে- এর মধ্যে বেসরকারি খাতের নামগুলো হলো- বসুন্ধরা, নাসা, এস আলম ইত্যাদি। তিনি বলেন, ‘এনডিএ (গোপনীয়তার চুক্তি) করে আমরা স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করবো। কিছু মিনি এনবিএল ইতিমধ্যে এসেছে এবং ইউসুবিল শতকরা এক-দুটি অ্যাডভান্স এসেছে। মূল উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশ থেকে যেগুলো টাকা গিয়েছে সেগুলো রিকভার করা।’
এবি ব্যাংকের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ প্রকল্পে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের পরামর্শ নেওয়া হয়নি; এটি একটি ‘টোটাল ব্যাঙ্কিং’ কনসেপ্ট যেখানে বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা ছিল। সভায় মোট প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল, যা প্রায় ৩০টি সংস্থার সঙ্গে আলাপচারিতার ইঙ্গিত দেয়।’
পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক মানি-লন্ডারিং সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছে; এসব প্রতিষ্ঠানকে এনডিএ করে ফরেন অ্যাসেট রিকভারি কাজ করতে বলা হবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছাড়াও এ তালিকায় রয়েছেন- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ পরিবারের আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, ওরিয়ন, জেমকন, নাবিল ও সামিট গ্রুপ। এসব গোষ্ঠীর মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের কিছু অংশ সুবিধাভোগী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ আছে।
পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে আগে কাজ করা আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার নামও উল্লেখ করা হয়েছে - দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি , ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-কোরাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা তথ্য আহরণে সফলতা পেয়েছে এবং এখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন অবিলম্বে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.