নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্র্যাট মনোনীত প্রার্থী জোহরান মামদানি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শহরে পা রাখলে, তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হবে - যদি তিনি নির্বাচিত হন।
এক সাক্ষাৎকারে মামদানি নেতানিয়াহুকে গাজায় গণহত্যার জন্য দায়ী একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহু যদি নিউ ইয়র্ক সফর করেন, তাহলে বিমানবন্দরে তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানাকে সম্মান জানানো হবে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ কার্যত অসম্ভব হতে পারে। এটি কেন্দ্রীয় আইন লঙ্ঘন করতে পারে। তবুও মামদানি দ্বিমত পোষণ করে বলেন, তিনি প্রতিশ্রুতি থেকে পিছু হটবেন না।
তিনি বলেন, এটি এমন একটি বিষয়, যা আমি পূরণ করতে চাই। নিউইয়র্ক এমন একটি শহর, যা আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে দাঁড়াবে - আমার ইচ্ছা এটি নিশ্চিত করা।
যুক্তরাষ্ট্র আইসিসি'র কোনো পক্ষ নয় এবং এর কর্তৃত্বও স্বীকার করে না। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করার পর গত ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক আদালতটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তি দেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের ওপর এই আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহুও হুমকিগুলো উড়িয়ে দিয়েছেন। জুলাই মাসে তিনি বলেছিলেন, মামদানির মন্তব্য নিয়ে তিনি চিন্তিত নন।
ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে তিনি গ্রেপ্তারের ধারণাটিকে 'অনেক দিক থেকেই বোকামি' বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন, আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সেখানে (নিউইয়র্কে) যাব এবং আমরা দেখব...।'
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি এবং অন্য একজন ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে এবং জেনেশুনে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি এবং ওষুধসহ তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য জিনিসপত্র থেকে বঞ্চিত করেছেন।
মামদানি যুক্তি দিয়েছেন, নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে থাকাকালীনও সামরিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বেসামরিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, নিউ ইয়র্কবাসীরা ইসরায়েল এবং যুদ্ধের বিষয়ে মামদানির অবস্থানকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছেন।