11/22/2024 টাইটান বিপর্যয় : সেকেন্ডেরও কম সময়ে পুড়ে ছাই পাঁচ আরোহী
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৩ ০৯:৩৯
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অতলে অভিযানে যাওয়া টাইটান ডুবোযান ব্যাপক বিস্ফোরণের শিকার হয়েছিল। গভীর সাগরের পানির তীব্র চাপের কারণে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চোখের পলক ফেলারও কম সময়ে পাঁচ আরোহী মৃত্যুবরণ করেছেন। আমেরিকান ডুবোযান বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য দিয়েছেন।
সাগরের ১৩ হাজার ৪৬৭ ফুট (তিন হাজার ৮০০ মিটার) গভীরে ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিলেন টাইটানের আরোহীরা।
ধ্বংসাবশেষের কাছে পৌঁছনোর পর ডুবোযানটির সঙ্গে ওপরে থাকা জাহাজের যোগাযোগ হারিয়ে যায়। ব্যাপক অনুসন্ধানের পর টাইটানের কয়েকটি অংশ পাওয়া যাওয়ার পর এর পরিণতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বিশ্লেষণের পর বলছেন, সাগরতলের তিন হাজার ৫০০ মিটার নিচে দুর্ঘটনার শিকার হয় টাইটান।
ওই গভীরে তাদের ওপর প্যারিসের বিশাল ইস্পাতের কাঠামো আইফেল টাওয়ারের সমান পানির চাপ ছিল। সম্ভাব্য নির্মাণ ত্রুটির কারণে টাইটানের মূল কাঠামোর গায়ে ফাটল থাকায় ডুবোযানটির ভেতর-বাইরের চাপের ব্যাপক তারতম্য হয়। অত্যধিক পানির চাপে টাইটানের কাঠামো অকল্পনীয় গতিতে ভেতরের দিকে সংকুচিত হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পরমাণু সাবমেরিন কর্মকর্তা ডেভ করলি জানান, ওই গতি ছিল কমপক্ষে ঘণ্টায় দুই হাজার ৪১৪ কিলোমিটার।
এরপর বিস্ফোরণটি ঘটতে সময় লাগে মাত্র এক মিলিসেকেন্ড, যা এক সেকেন্ডের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ। মানবমস্তিষ্ক সহজাত প্রক্রিয়ায় যেকোনো সাড়াদানেও অন্তত ২৫ মিলিসেকেন্ড সময় নেয়।
ডুবোযানের ভেতরের বাতাসে উচ্চমাত্রায় হাইড্রোকার্বনে অণু থাকে। চাপের কারণে সেখানে আগুন ধরে প্রবল বিস্ফোরণ ঘটায়। তা মানবশরীরকে জ্বালিয়ে দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভস্মে পরিণত করে।
সঙ্গে রুবিকস কিউব নিয়েছিলেন সুলেমান
টাইটান ডুবোযান দুর্ঘটনায় নিহত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তরুণ সুলেমান দাউদ ‘রুবিকস কিউব’ নামের জনপ্রিয় ধাঁধাজাতীয় খেলনা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল, অতি গভীর সাগরতলে এর সব দিক মিলিয়ে বিশ্বরেকর্ড ভাঙা। সুলেমানের মা ক্রিস্টিন দাউদ সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানান। তাঁর বাবা শাহজাদা দাউদ সঙ্গে ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলেন মুহূর্তটি ধারণ করতে।
ক্রিস্টিন দাউদ জানান, ছেলের স্মৃতির সম্মানে তিনি ও তাঁর মেয়ে রুবিকস কিউব মেলানো শেখার চেষ্টা করবেন এবং তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে যাবেন। স্বামী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তিনি (শাহজাদা) অনেক কিছুতে যুক্ত ছিলেন। তিনি মানুষকে সাহায্য করতেন, আমি সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। এটি আমার মেয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।’
তদন্ত চলছে
টাইটান ডুবোযান বিপর্যয়ের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে আমেরিকান কোস্ট গার্ড বাহিনী। গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দেওয়া এই দুর্ঘটনার সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখা হবে এই তদন্তে। তদন্তের প্রধান হচ্ছেন ক্যাপ্টেন জেসন নিউবাউয়ার। তদন্ত প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, মূল অগ্রাধিকার হচ্ছে টাইটানের পুরো ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করা। এ ছাড়া নিহতদের দেহাবশেষের কোনো অংশ পাওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
সূত্র : বিবিসি
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.