07/07/2025 রোববার শুরু ব্রিকস সম্মেলন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি থাকবে আলোচনায়
মুনা নিউজ ডেস্ক
৬ জুলাই ২০২৫ ২০:৩৫
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে রোববার শুরু হতে যাচ্ছে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। এতে সদস্যদেশগুলোর নেতারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর বাণিজ্যনীতির সমালোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়ে নিজেদের মধ্যকার বিভাজন দূর করতে এখনো হিমশিম খাচ্ছে ফোরামটি।
উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর এই জোট বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদনের ৪০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। সম্মেলনের সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে জানাশোনা আছে এমন সূত্রগুলো জানিয়েছে, সদস্যদেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায্য আমদানি শুল্কের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান জানাতে প্রস্তুত।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর মিত্র এবং প্রতিদ্বন্দ্বী উভয়কেই একের পর এক শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে আসছেন। তাঁর সর্বশেষ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার থেকে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে বাণিজ্য অংশীদারদের নতুন শুল্কহার সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। ৯ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে।
ব্রিকসের সদস্যদেশগুলো হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই ১১টি উদীয়মান দেশের কূটনীতিকেরা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে যুক্তরাষ্ট্র বা দেশটির প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। এরপরও এটাকে ওয়াশিংটনের প্রতি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
রিওর পন্টিফিকাল ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির ব্রিকস পলিসি সেন্টারের পরিচালক মার্তা ফার্নান্দেজ বলেন, এমন একটি শীর্ষ সম্মেলনই প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যেখানে সতর্কতার সঙ্গে বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে।
বিশেষ করে চীনের ক্ষেত্রে এ অবস্থানটি যায়। কারণ, চীন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পাল্টা শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনা করেছে। ফার্নান্দেজ বলেন, বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে আরও বিভাজন উসকে দেওয়ার জন্য এটি সঠিক সময় বলে মনে করা হচ্ছে না।
থাকছেন না সি ও পুতিন
দুই দশক আগে দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি ফোরাম হিসেবে যাত্রা শুরু করা ব্রিকসকে এখন পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে চীনের নেতৃত্বাধীন পাল্টা ক্ষমতার ভারসাম্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অনুপস্থিতির কারণে এই সম্মেলনের রাজনৈতিক প্রভাব কমে যাবে। চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১২ বছর দায়িত্ব পালনকালে এবারই প্রথম তিনি বার্ষিক এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
এই সম্মেলনে থাকছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে, সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন তিনি। এই সম্মেলনে থাকছেন না ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি থেকে এখনো দেশটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণার খসড়া প্রস্তুতের আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজা এবং ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের বিষয়ে ব্রিকস কী অবস্থান নেবে, সে বিষয়ে সদস্যদেশগুলো এখনো একমত হতে পারেনি। ইরানি আলোচকেরা আরও কঠোর সম্মিলিত অবস্থানের জন্য চাপ দিচ্ছেন, যাতে ঘোষণাপত্রে শুধু ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রয়োজনীয়তা এবং শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির কথা উল্লেখের বাইরেও শক্ত বক্তব্য থাকে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.