05/14/2025 মোদির বক্তব্যকে 'পরাজিতের আর্তনাদ' বললেন খাজা আসিফ
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৩ মে ২০২৫ ১৬:৪৫
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, এই স্বল্পস্থায়ী সংঘাতেও পাকিস্তান কূটনৈতিক ও কৌশলগতভাবে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। সোমবার জিও নিউজের জনপ্রিয় টক শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টেলিভিশন ভাষণের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আসিফ বলেন, একজন পরাজিত নেতার মরিয়া আকুতি স্পষ্ট হয়েছে মোদির বক্তব্যে। তবে তিনি একে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবেও দেখছেন। কারণ, মোদি নিজেই স্বীকার করেছেন- কাশ্মীর ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা এখনও উন্মুক্ত রয়েছে। খাজা আসিফ এই মন্তব্যকে দুই দেশের চলমান উত্তেজনার মধ্যেও এক ধরনের ‘আশার আলো’ হিসেবে দেখছেন।
খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। অথচ ভারতই বারবার নিষ্ক্রিয় ঘোষিত সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে শান্তি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ভারতের অভ্যন্তরেই মোদির জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে এবং জনগণ ধীরে ধীরে তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের অবস্থান পরিষ্কার করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যে কোনো সংলাপেই কাশ্মীরসহ সব মূল ইস্যু উত্থাপন করা হবে। খাজা আসিফ ভারতকে শুধু পাকিস্তানে নয়, কানাডার মতো অন্য দেশেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, ভারত শুধু পূর্ব সীমান্তেই সরাসরি লড়াই করছে না, বরং পশ্চিম সীমান্তেও তেহরিকে তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর মতো গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দিয়ে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত। তিনি জানান, দীর্ঘ দুই দশক ধরে ভারতের এই প্ররোচনামূলক ভূমিকার কারণে পাকিস্তানকে এখন পশ্চিম সীমান্তেও সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে হচ্ছে, যা আগে প্রয়োজন পড়ত না। ১০ মে থেকে শুরু হওয়া প্রতিরোধমূলক অভিযানের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান এখন উচ্চ-মূল্যসম্পন্ন ভারতীয় লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পরিকল্পনা করে বলে জানান আসিফ।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে ভারত ইতোমধ্যে পাঁচটি দেশের কাছে মধ্যস্থতার অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়। এই বক্তব্যগুলো এমন সময়ে এসেছে যখন দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে আবারও উত্তেজনার নতুন ধারা তৈরি হয়েছে।
খাজা আসিফের বক্তব্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে, পাকিস্তান আর আগের মতো আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে নেই; বরং তারা এখন সক্রিয় কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। মোদির বক্তব্যে আলোচনার দরজা খোলা থাকার স্বীকারোক্তিকে পাকিস্তান এক নতুন সম্ভাবনার সূচনা হিসেবে দেখছে। তবু দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক অনেকটাই নির্ভর করছে পারস্পরিক কূটনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় চাপের ওপর।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.