প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফর নিয়ে উদ্বেগে ভুগছে দখলদার ইহুদীবাদী ইসরাইল। ওই সফরে ট্রাম্প কী বলবেন এ বিষয়ে কোন ধারণাই নেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিসের।

সবচেয়ে ভালো যেটা হতে পারে, ট্রাম্প আরব রাষ্ট্রগুলির সমর্থিত একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন যাতে হামাসকে ক্ষমতায় না রেখে এবং অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে যুদ্ধ শেষ করা যায়। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে, তিনি কিছুই উপস্থাপন করবেন না, অথবা তার প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করা হয়, ট্রাম্প আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং গাজায় যুদ্ধ অন্তহীনভাবে চলতে থাকে।

পাশাপাশি, মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক দিন দিন শীতল হয়ে পড়ছে বলে দাবি করেছে একাধিক ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম। শুক্রবার (৯ মে) ইসরাইলি একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিডল ইস্ট মনিটর তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি বিভিন্ন সংবাদপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, নেতানিয়াহু নাকি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে চেয়েছেন- এমন সন্দেহ থেকেই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছেন।

ইসরাইলি আর্মি রেডিওর সাংবাদিক ইয়ানির কোজিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, নেতানিয়াহু বিভিন্ন সময়ে তাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন বলে ট্রাম্পের সন্দেহ। তিনি আরও জানান, নেতানিয়াহুর ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছেন ট্রাম্প এবং এখন তিনি মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে নেতানিয়াহুর ওপর নির্ভর না করেই এগিয়ে যেতে চান।

কোনও মার্কিন বা ইসরাইলি সরকারি সূত্র এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য না করলেও, ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থি সংবাদপত্র ইসরাইল হায়োম তাদের একটি প্রতিবেদনে কোজিনের দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ছে এবং একাধিক ইস্যুতে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে ইসরাইলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার সিনিয়র রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কোজিনের মতে, ওই বৈঠকে ডারমার ট্রাম্পকে কী করতে হবে, তা নির্দেশ দেয়ার চেষ্টা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে নেতানিয়াহুর প্রতি ট্রাম্পের আস্থার ভাঙন আরও গভীর হয়।

ইসরাইল হায়োম আরও জানায়, ট্রাম্প মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে নেতানিয়াহু সময়ক্ষেপণ করছেন। তাই তিনি আর ইসরাইলের ওপর নির্ভর না করে এককভাবে এগিয়ে যাওয়ার মনস্থির করেছেন। এই ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, এক সময়ের ঘনিষ্ঠ দুই নেতা এখন কৌশলগতভাবে একে অপরের কাছ থেকে সরে আসছেন-বিশেষ করে জটিল মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ ভূরাজনৈতিক সমীকরণ ঘিরে।