02/03/2025 বাংলাদেশে এসে টিউলিপের কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করে গেছেন ব্রিটিশ তদন্ত দল
মুনা নিউজ ডেস্ক
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৩
ব্রিটেনের এফবিআইখ্যাত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) দেশটির সাবেক নগর ও দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের অংশ হিসেবে এনসিএ-এর গোয়েন্দারা বাংলাদেশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে গোপনে বৈঠকও করেছেন বলে জানা গেছে।
গত মাসে হওয়া ওই বৈঠকে ব্রিটিশ দলকে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, তারা টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নতুন তথ্য যোগাড় করতে সমর্থ হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল ও দ্য মেইল অন সানডের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো- তার খালা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে রাশিয়ার সঙ্গে একটি বিতর্কিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি করেছিল। সেই প্রকল্প থেকে টিউলিপ এবং তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার তছরুপ করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
এ ছাড়া টিউলিপের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে একাধিক আবাসন উপহার হিসেবে পেয়েছেন, যা তিনি সংশ্লিষ্ট ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন করে গিয়েছিলেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তহবিল তছরুপের অভিযোগের ঘটনায় তদন্তের অংশ হিসেবে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির গোয়েন্দারা গত মাসের ওই বৈঠকে জানতে পারেন যে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।এই তথ্য প্রকাশের ফলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ টিউলিপের ব্যাংক হিসাব, ই-মেইল রেকর্ড পরীক্ষা এবং এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাবেক ট্রেজারিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার মা শেখ রেহানা ও খালা শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারে পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড (৫ বিলিয়ন ডলার) আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটম নির্মাণ করে এবং এর ৯০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে রাশিয়া। ২০১৩ সালে এই প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরের সময় টিউলিপ সিদ্দিককে ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বলা হচ্ছে, টিউলিপ এতে মধ্যস্থতা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
বাংলাদেশের সরকারি একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানিয়েছে, ব্রিটিশ দলটি ব্রিটেনে বালাদেশি কর্মকর্তাদের দ্বারা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ চুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ছাড়া তারা টিউলিপের বিরুদ্ধে হয়ত তদন্ত করতে পারে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তার ১০ বছর বা তারও বেশি সময়ের জেল হতে পারে।
বাংলাদেশি অপর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের এনসিএ-এর কর্মকর্তারাই এই গোপন বৈঠকটি আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। এরপর ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন এটি আয়োজন করে।
এর আগেও এনসিএ-এর কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেটি গত বছরের অক্টোবরে। সেবার তারা কথা দিয়ে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব অর্থ পাচার করা হয়েছে, সেগুলো ফেরত দিতে তারা সহায়তা করবেন।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.