01/15/2025 যুদ্ধবিরতির কাছাকছি হামাস-ইসরাইল; তিন ধাপে হতে পারে কার্যকর
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৫ জানুয়ারী ২০২৫ ১০:১১
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতির অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছেছে হামাস-ইসরাইল। টানা সাতদিন ধরে কাতারের রাজধানী দোহায় চলা আলোচনায় যেকোনো সময় আসতে পারে সিদ্ধান্ত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে দুই পক্ষকেই তিনটি ধাপ পার হতে হবে বলে বিশ্লেষকরা ধারনা করছেন।
এরই মধ্যে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে। ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। যে তিনটি ধাপে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে, তা নিন্মরূপ-
প্রথম ধাপ
এই ধাপে উভয় পক্ষের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ হবে, যার মধ্যে রয়েছে ইসরাইলি বাহিনীকে গাজার কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে প্রত্যাহার করা, যেমন ওয়াদি গাজা এবং এলরাশিদ স্ট্রিট। এই সময়কালে হোস্টেজ বিনিময় হবে, যেখানে হামাস ৩৩ জন হোস্টেজ মুক্তি দেবে, যার মধ্যে রয়েছে মহিলা, শিশু এবং বয়স্ক পুরুষ এবং ইসরায়েল কছিু সংখ্যক ফিলিস্তিনী বন্দী মুক্তি দেবে। যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে পারবে এবং পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
দ্বিতীয় ধাপ
এই ধাপে আরও কিছু ইসরাইলি হোস্টেজ মুক্তি দেওয়া হবে, বিশেষ করে সামরিক বয়সী পুরুষ সৈন্য এবং বেসামরিক পুরুষদের; একই সাথে গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী আরও সৈন্য প্রত্যাহার করবে। অবশ্য, বন্দী বিনিময়ের অনুপাত এবং যে এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার হবে তার নির্দিষ্ট বিবরণ নিয়ে এখনও আলোচনা চলমান রয়েছে।
তৃতীয় ধাপ
হামাস কর্তৃক অবশিষ্ট হোস্টেজ মুক্তি দেওয়ার জন্য আলোচনা চলতে থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে মৃত হোস্টেজের দেহ, এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধের অবসান। গাজার পুনর্নির্মাণ এবং যুদ্ধের পরের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কেও বৈঠক হবে।
তবে এখনও যেসব গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে দুই দলের (ইসরাইল আর হামাস) মধ্যে মতবিরোধ আছে তা হলো:
স্থায়ী বনাম অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি: হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছে, যেখানে ইসরাইল শুধুমাত্র অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা করছে।
ইসরাইলি সামরিক উপস্থিতি: ফিলাডেলফি করিডোর এবং গাজার ইসরায়েলের সীমান্ত ধরে বাফার জোন স্থাপনের বিষয়ে ইসরাইলি বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে হামাসের মারাত্মক প্রতিবাদ রয়েছে। হামাস চায় ইসরাইলি সেনারা সম্পূর্ণরূপে গাজা ত্যাগ করবে, যা এখনও আলোচনা সাপেক্ষ।
হোস্টেজ এবং বন্দী বিনিময়: হামাস যেসব ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি চায় তাদের মধ্যে অনেকে ইসরাইলি আদালতে গুরুতর অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। এসব বন্দীদের মুক্তি দেওয়া বা না দেওয়ার ব্যাপারে এখনও মতবিরোধ রয়েছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন: হামাস গাজায় তাদের বাড়িতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসার অধিকার দাবি করছে, ইসরাইল ঐতিহাসিকভাবে যার বিরোধিতা করেছে।
অর্থাৎ, এখনই পুরো যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে উভয়পক্ষ রাজি হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হয়েতো হবে ধাপে ধাপে। এক ধাপ সফল হলে তবেই পরবর্তী ধাপে এগুবে। বিষয়টি যদিও অত্যন্ত জটিল, তবে এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার আর আমেরিকা, এটাই সবচেয়ে বড় আশার কথা।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.