04/15/2025 সিরিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটলেও ঘাঁটি ছাড়ছে না রুশ সেনারা
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৫৬
সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ এবং তাঁর প্রয়াত বাবা সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল–আসাদ মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তবে সম্প্রতি বাশার আল–আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার দুটি ঘাঁটির ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এই দুটি ঘাঁটি হলো লাতাকিয়ায় হামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তারতুসের নৌঘাঁটি।গত শুক্রবার স্যাটেলাইটে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামেইমিম ঘাঁটিতে কমপক্ষে দুটি আন্তোনভ এএন-১২৪এস মালবাহী উড়োজাহাজ দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে মালামাল তোলার জন্য এগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আন্তোনভ এএন-১২৪এস উড়োজাহাজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পণ্যবাহী উড়োজাহাজগুলোর একটি।
হামেইমিম ঘাঁটির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, শনিবার অন্তত একটি পণ্যবাহী উড়োজাহাজ লিবিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
রুশ সেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা সিরীয় সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্রগুলো রয়টার্সকে বলেছে, মস্কো তার বাহিনীকে সম্মুখযুদ্ধের ক্ষেত্র থেকে প্রত্যাহার করছে। তারা কিছু ভারী সরঞ্জাম এবং সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহার করছে।
পরিস্থিতির স্পর্শকাতরতার কথা বিবেচনা করে ওই সব সূত্র নিজেদের নাম প্রকাশে রাজি হয়নি। ওই সব সূত্র বলেছে, সিরিয়ার দুটি প্রধান ঘাঁটি থেকে সেনাদের সরাচ্ছে না রাশিয়া। এখন এমন কিছু করার ইচ্ছাও তাদের নেই।
কিছু কিছু সরঞ্জাম এবং আসাদের সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মস্কোতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই পর্যায়ে তাদের লক্ষ্য হলো স্থলভাগের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা এবং সে অনুযায়ী আবারও সংগঠিত হওয়া ও সেনা মোতায়েন করা। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে, এমন একজন জ্যেষ্ঠ সিরীয় সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।
নতুন অন্তর্বর্তী প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক জ্যেষ্ঠ বিদ্রোহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির বিষয়টি এবং আসাদ সরকার ও মস্কোর মধ্যে অতীতে হওয়া চুক্তিগুলোকে আলোচনার আওতাভুক্ত রাখা হয়নি।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি ভবিষ্যৎ আলোচনার বিষয় এবং সিরিয়ার জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
মস্কো যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম স্থাপন করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওই বিদ্রোহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমাদের বাহিনীও এখন লাতাকিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটির কাছাকাছি রয়েছে।’ তবে এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলেননি।
ক্রেমলিন বলেছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে ঘাঁটি নিয়ে আলোচনা করছে তারা। রয়টার্সের প্রতিবেদনটি নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সাড়া পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি রুশ সূত্র বলেছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং রাশিয়া তাদের ঘাঁটি থেকে সরে আসছে না।
সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা (আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি নামে বেশি পরিচিত) রাশিয়ার ঘাঁটির দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎকে কীভাবে বিবেচনা করছেন, তা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি।
২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ চলা অবস্থায় পশ্চিমা বিশ্ব আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান জানিয়েছিল। তখন সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ করার মধ্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসাদ সরকারের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর গত রোববার বাশার আল–আসাদকে পালাতে সহযোগিতা করে মস্কো। তাঁকে রাশিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.