04/19/2025 নিষিদ্ধ হল আসামে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়া
মুনা নিউজ ডেস্ক
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০৫
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্থানও অন্তর্ভুক্ত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার জানান, এর আগে একটি নিয়ম ছিল, যেখানে মন্দিরের মতো কিছু ধর্মীয় স্থানের কাছে গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। এবার সেই নিয়ম আরো প্রসারিত করা হয়েছে। তবে রাজ্যে দোকান থেকে মাংস কিনে বাড়ি বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে খাওয়া যাবে।
ভারতে মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তারা গরুকে পবিত্র মনে করে। এই কারণে দেশটিতে গরুর মাংস খাওয়া একটি সংবেদনশীল বিষয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত কয়েকটি রাজ্য গত কয়েক বছরে গরু জবাই ও গরুর মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভারতের ২৮টি রাজ্যের দুই-তৃতীয়াংশে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে গরু জবাই ও গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ, যার অনেকগুলোতেই বিজেপি শাসন করে। তবে এসব রাজ্যের কিছুতে মহিষের মাংস খাওয়া বৈধ।
এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন অংশে গরু নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মুসলিম মাংস ও গরু ব্যবসায়ীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনাও ঘটেছে। দারিদ্র্যপীড়িত দলিতদের জন্য গরুর মাংস সস্তা প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
আসামে ২০২১ সালে এমন একটি আইন কার্যকর হয়, যেখানে হিন্দু, জৈন ও শিখ সম্প্রদায়ের বাসস্থানের কাছাকাছি গরুর মাংস কেনাবেচা নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে মন্দিরের কাছেও গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী শর্মা বলেছেন, প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়ার এই নতুন নিষেধাজ্ঞা আগের আইনে যোগ করা হবে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, মুসলিম অধ্যুষিত সমাগুড়ি আসনে একটি উপনির্বাচনে জেতার জন্য মুখ্যমন্ত্রী শর্মা ভোটারদের গরুর মাংস সরবরাহ করেছেন।
বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কংগ্রেসের আইন প্রণেতা রকিবুল হোসেন বলেন, ‘ভোটারদের গরুর মাংস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তার দলের হিন্দু জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’ শর্মা বুধবার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘কংগ্রেস চাইলে আমি রাজ্যে পুরোপুরি গরুর মাংস নিষিদ্ধ করতে প্রস্তুত।’
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এটি মানুষের পছন্দের খাবার খাওয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ। সর্বভারতীয় ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সদস্য হাফিজ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘যদি তারা গোয়া বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অন্য রাজ্যে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করতে না পারে, তাহলে আসামে কেন?’ উল্লেখ্য, গোয়া ও অরুণাচল প্রদেশের মতো কিছু রাজ্যে গরুর মাংস বিক্রি ও খাওয়া বৈধ, যেখানে বিজেপি শাসন করে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.