11/24/2024 মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪২
মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার আদলে ইসলামিক আদালত নির্মাণ করা উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। তিনি বলেন, যারা ইসলামিক আইন দ্বারা সমস্যা সমাধান করতে চায় তাদের জন্যে ইসলামিক আদালত পরিচালনা করা যেতে পারে। সেটি যেকোনো বিষয়েই হোক না কেন। গ্লোবালাইজেশন ও মডারেশনের নামে আমরা দিন দিন আমাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্য-ধর্ম থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। এখন ধর্মকে সবাই আধুনিক মনে করে না।কিন্তু আমি মনে করি এটাই যথার্থ সময় আমরা আমাদের মূলে পৌঁছানোর। আমাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্য-ধর্মকে আবার আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা উচিত।
২৩ নভেম্বর, শনিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে: সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিজেপি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
বর্তমান সংবিধান সময়োপযোগী নয় মন্তব্য করেন বিজেপি চেয়ারম্যান। তিনি প্রস্তাব দেন, মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান সংবিধানে সংযোজন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, সংবিধানের ২(ক) নং পরিচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে রাষ্ট্র হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্ম পালনে সমান মর্যাদা ও সমান অধিকার নিশ্চিত করবে। আমি মনে করি গত ২০ বছর ধরে গ্লোবালাইজেশনের নামে আধুনিকতার নামে ধর্মকে আক্রমণ করারা প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। গণজাগরণ মঞ্চের সেই বিপ্লবের পর থেকেই এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থানকে ভিত্তি করে আমাদের ধর্ম, আমাদের মহানবী (সাঃ) কে বিভিন্নভাবে কটূক্তি করে অপমান করার একটি পায়তারা করছে একটি পক্ষ।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি আমাদের রাষ্ট্রধর্ম যদি ইসলাম হয়ে থাকে তবে আমাদের মহানবী (সাঃ) নিয়ে কটূক্তি করলে শাস্তির বিধান রাখতে হবে। যে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান সে দেশের সংবিধানে মহানবী (সাঃ) এর কথা থাকবে না সেটা আমি মানসিকভাবে মেনে নিতে পারি না। জাতির জনক নিয়ে কথা বললে যদি ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয় তবে কেন আমাদের মহানবী (সাঃ) কে নিয়ে কথা বললে শাস্তির বিধান থাকবে না। মহানবী (সাঃ) কে নিয়ে কোন প্রকার বাজে কথা বলা যাবে না এটা গুরুত্ব সহকারে সংবিধানে থাকা উচিত। এতে করে অন্য কোন ধর্মকেও ছোট করা হবে না। কারণ আমরা এই ধারাতেই বলে দিচ্ছি, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলেও মানুষ অন্যান্য ধর্ম পালনে সমান মর্যাদা ও সমান অধিকার নিশ্চিত করবে।
বর্তমান সংবিধান ফ্যাসিস্ট বানানোর বড় কারখানায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিগত সরকার এই সংবিধানকে ব্যবহার করে বারবার মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, ভোটের অধিকার গণতন্ত্রের গলাটিপে সব ধ্বংস করে ফেলেছে। সুতরাং এই সংবিধান দিয়ে যেকোনো সরকার পরিচালিত হলে তাদের ফ্যাসিস্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি।
বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান প্রাসঙ্গিক হওয়া প্রয়োজন। এই সংবিধান আজকের দিনের কথা বলে না। সুতরাং এর সংস্কার চাই। সংবিধান সংস্কার করবে কে? আমি এখনো বিশ্বাস করি, সংবিধান সংস্কার করতে হলে জনগণের সরকারের প্রয়োজন। বিশ্বাস করি, নির্বাচিত সরকারই সংবিধান সংস্কার করার নৈতিক অধিকার রাখে।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, জুডিশিয়াল কমিশনের বিচারক নিয়োগ- এই ব্যাপারগুলো আগামী দিনে যারা সরকারে আসবে বা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে, তাদের বসে এগুলো করা উচিত বলে মনে করেন বিজেপি চেয়ারম্যান। তিনি আরও বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ বাংলাদেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংসদ সদস্যের দায়িত্বের বিষয়ে সংবিধানে কিছু নেই উল্লেখ করে আন্দালিভ রহমান বলেন, সংসদ সদস্যদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে সংবিধানে থাকা উচিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৈষম্য হয় রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কোনো ধরনের বৈষম্য করা যাবে না, সংবিধানে এটা থাকা দরকার।
পার্থ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংবিধানের বিধান থাকা উচিত।’ জার্মানিতে তাই করা হয়েছে উদাহরণ দেখিয়ে তরুণ এ রাজনীতিক বলেন, মানুষের জন্য সংবিধান। সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। যেই সংবিধানে মানুষকে রক্ষা করে না তা মানুষই ছুঁড়ে ফেলে দেবে। এটা প্রাসঙ্গিক হওয়া জরুরি। সংবিধান সংস্কার করতে হবে। তবে সেজন্য জনগণের সরকার প্রয়োজন। নির্বাচিত সরকারই কেবল সংবিধান সংশোধন করতে পারে।
বর্তমান সংবিধান সময়োপযোগী নয় মন্তব্য করে বিজেপি চেয়ারম্যান প্রস্তাব দেন, সমানুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল প্রভৃতি সংবিধানে সংযোজন করা প্রয়োজন।
বিজেপির মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন প্রকাশ, বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস মাতাব্বর, বাংলাদেশ জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক মো. হারুন–অর–রশিদ ও বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.