12/04/2024 তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে কমছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা?
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৯ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০৮
ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর বিশেষজ্ঞরা একটা বিষয়ে কমবেশি একমত হয়েছেন- মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল এখন নিজেদের মরজিমাফিক সামরিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে। আর তাদের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র পরিণত হয়েছে সাধারণ সহকারীতে। অথচ এই যুক্তরাষ্ট্রই ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সব ঘটনার নেপথ্য পরিচালক। কিন্তু এখন ইসরায়েলের ওপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কতটুকু প্রভাব বজায় আছে, তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা। বিশেষত হামাস, হিজবুল্লাহ ও তেহরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের লাগামহীন আগ্রাসনে বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। খবর নিউ ইয়র্ক টাইমসের।
মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানে পূর্বসূরিদের মতো আগ্রাসী পদক্ষেপের বদলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন বাইডেন। তার কিছু প্রচেষ্টায় সামান্য সফলতা দেখা গেছে। যেমন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ সংবেদনশীল অন্যান্য স্থাপনায় হামলা চালানো থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখতে সমর্থ হয়েছেন তিনি। কিন্তু গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনও কার্যত ব্যর্থ আমেরিকান প্রশাসন। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।
পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে গিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামরিক অভিযান কেবল জোরালো করেই চলেছেন। ফিলিস্তিনে হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিরুদ্ধে তার হামলা অব্যাহত আছে। তার কার্যকলাপের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের গণ্ডি পেরিয়ে রাশিয়া ও চীন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নেতানিয়াহুর কল্যাণে ইউক্রেনে পুতিন ও তাইওয়ানে শি জিনপিং যা ইচ্ছা তাই করার অলিখিত সার্টিফিকেট নিয়ে নিতে পারেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালিয়েছিল হামাস। এই হামলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে শত্রু নিধনের মিশনে নেমেছেন নেতানিয়াহু। তার সমর্থকরা এই পদক্ষেপকে দেখছেন মধ্যপ্রাচ্য সংকট স্থায়ী সমাধানের একমাত্র সুযোগ হিসেবে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, সার্বিক চিত্র বিবেচনায় না নিয়েই অগ্রসর হচ্ছেন নেতানিয়াহু। এর ফলাফল কারও অনুকূলে নাও যেতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টায় বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। কিন্তু সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ইসরায়েলের পক্ষ নিতে যুক্তরাষ্ট্র দুবার চিন্তা করবে না বলেই সবার আশঙ্কা।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। নির্বাচনের মাত্র দশ দিন আগে ইরানে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। তাদের কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ছে নির্বাচনের মাঠেও।
আগের মেয়াদে ইসরায়েলের পক্ষে ও ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারও ইসরায়েলি হামলার পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, এবার প্রেসিডেন্ট হলে, আবারও ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস নিজেও ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু রক্ষণশীল অনেকের বিশ্বাস, হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতি নমনীয়তা দেখাতে পারেন হ্যারিস।
নিজের দেশের ভেতরেও বেকায়দা অবস্থায় রয়েছেন নেতানিয়াহু। কট্টরপন্থিদের সঙ্গে মিলে জোট সরকার চালাচ্ছেন তিনি। আবার, তার বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির মামলা। ফলে, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের দোলাচলে সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.