11/23/2024 আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৩২
আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক। শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে কানাডা। তবে তাদের এই অভিযোগ ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছে ভারত। এছাড়াও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের পর গত বছর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সংসদে ওই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। ওই হত্যা তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য তিনি ভারতকে অনুরোধও করেছিলেন। ভারত সেই অভিযোগ অস্বীকারই শুধু করেনি, শুরু থেকেই প্রমাণ চেয়ে আসছে। ভারতের দাবি, কানাডা সরকার এখন পর্যন্ত একটি প্রমাণও দেখাতে পারেনি।
১৪ অক্টোবর, সোমবার এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘তারা কানাডার অযৌক্তিক অভিযোগগুলোকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে এবং এগুলো ট্রুডো সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে অনেকবার অনুরোধ সত্ত্বেও কানাডা সরকার কোনো প্রমাণ দিতে পরেনি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই যে, তদন্তের অজুহাতে, রাজনৈতিক লাভের জন্য ভারতকে কলঙ্কিত করার একটি ইচ্ছাকৃত কৌশল।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য কানাডা সরকারের এই সবশেষ প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় ভারত পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার রাখে।’
কানাডার সরকারি বার্তায় নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাম জোড়া হয়েছে সে দেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মার। তার নাম উল্লেখ করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ভার্মা তার ৩৬ বছরের কর্মজীবন দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি জাপান ও সুদানেও ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এছাড়া সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন ইতালি, তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও চীনে। তার বিরুদ্ধে কানাডা সরকার যে অভিযোগ ও অপবাদ দিয়েছে, তা হাস্যকর ও উপেক্ষণীয়।’
ট্রুডো যে অভিযোগে ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চান, সেই একই অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রও। সে দেশের নাগরিক খালিস্তানি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ভারত যুক্ত বলে বাইডেন সরকারের অভিযোগ। ভারত কিন্তু তা অবাস্তব বলে উড়িয়ে দেয়নি; বরং অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে।
এদিকে এক প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে এবং দিল্লি অটোয়ার এ অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানাবে।
উল্লেখ্য, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে দিল্লি অটোয়াকে তাদের দেশে কূটনৈতিক উপস্থিতি কমাতে বলার পর কানাডা ২০২৩ সালের অক্টোবরে ভারত থেকে ৪০ জনেরও বেশি কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে।
কানাডা থেকে নিজেদের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মাকে প্রত্যাহার করে নেবে ভারত। ট্রুডো সরকারের অভিযোগের জেরে সোমবার দিল্লিতে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে জানায়, ‘আমরা তাদের (ভারতের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান কানাডা সরকারের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘চরমপন্থা এবং সহিংসতার পরিবেশে ট্রুডো সরকারের পদক্ষেপ তাদের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলেছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান কানাডা সরকারের প্রতিশ্রুতিতে আমাদের কোনো বিশ্বাস নেই। তাই, ভারত সরকার কানাডা থেকে নিজেদের হাইকমিশনার ও অন্যান্য টার্গেটেড কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.