11/23/2024 যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক বন্দি-বিনিময়
মুনা নিউজ ডেস্ক
২ আগস্ট ২০২৪ ০৪:৩৯
স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় করেছে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্ব। এ চুক্তির আওতায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচসহ উভয়পক্ষের ২৬ জন মুক্তি পেয়েছেন। ০২ আগস্ট, শুক্রবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভ্যান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আজকের বন্দি- বিনিময় হবে ঐতিহাসিক। শীতল যুদ্ধের পর থেকে এভাবে এত সংখ্যক ব্যক্তিকে বিনিময় করা হয়নি। অনেক, অনেক মাসের জটিল ও শ্রমসাধ্য কয়েক দফা সমঝোতার চূড়ান্ত ফল এটি।'
এই বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছেন আমেরিকান সাংবাদিক ইভান গের্শকোভিচ, আলসু কুর্মাশেভা, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক নৌ-সেনা পল উইলান ও স্থায়ী বাসিন্দা ভ্লাদিমির কারা-মুর্জা।
যুক্তরাষ্ট্র সর্বমোট ১৬ জনের মুক্তিকে নিশ্চিত করেছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ভুলবশত আটক হওয়া পাঁচজন জার্মান ও সাতজন রুশ নাগরিক। আমেরিকা, জার্মানি, পোল্যান্ড, নরওয়ে ও স্লোভেনিয়ায় আটক থাকা আটজনের বিনিময়ে এদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে।
শীতল যুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এটাই বৃহত্তম বন্দি-বিনিময়।
সুলিভ্যান বলেন, ভুলবশত আটক করা ব্যক্তিদের মুক্তিকে নিশ্চিত করতে এতগুলো দেশ ও মিত্র এই প্রথম সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে।
আমেরিকানদের পাশাপাশি এই চুক্তি জার্মান নাগরিক ও রুশ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিকেও নিশ্চিত করেছে। যারা মুক্তি পাচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ডিয়েটার ভরোনিন, কেভিন লিক, রিকো ক্রিগার, প্যাট্রিক শুয়েবেল, হেরমান মোয়েস, ইলিয়া ইয়াসিন, লিলিয়া চেনিশেভা, কেসনিয়া ফাদেয়েভা, ভাদিম ওস্তানিন, আন্দ্রেই পিভোভারভ, ওলেগ ওরলভ ও সাশা স্কোচিলেঙ্কো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'এই নারী ও পুরুষদের কয়েকজনকে অন্যায়ভাবে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। তারা সকলে অকল্পনীয় যন্ত্রণা ও অনিশ্চয়তা সহ্য করেছেন। আজ তাদের যন্ত্রণা শেষ। তাদের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করেছে যে চুক্তি তা কূটনীতির কৃতিত্ব।'
আমেরিকানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিন আটক ছিলেন সাবেক মেরিন পল উইলান। ২০১৮ সালে তাকে মস্কোতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ২০২০ সালে তাকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সংবাদদাতা গের্শকোভিচ এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির সাংবাদিক কুর্মাশেভা উভয়কে ২০২৩ সালে আটক করা হয়েছিল। ১৯ জুলাই পৃথক রুদ্ধদ্বার বিচারে উভয়কেই সাজা দেয়া হয়েছিল। এই বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসন বলে ব্যাপকভাবে নিন্দা করা হয়েছিল।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম-লেখক ও সক্রিয় সমাজকর্মী কারা-মুর্জাকে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জেল থেকে লেখা তার চিঠিগুচ্ছের জন্য এই রাজনীতিক ও ইতিহাসবিদকে পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল।
রাশিয়ার পক্ষে ক্রেমলিন ভাদিম ক্রাসিকভের মুক্তির জন্য বোঝাপড়া করেছে। এই রুশ জার্মানিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।
সুলিভ্যান সংবাদদাতাদের বলেন, 'এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে ভাদিম ক্রাসিকভ-সহ বাকিদের বিনিময় ছাড়া এই সকল ব্যক্তির মুক্তি দিতে রাজি হবেন না রুশরা।'
রাশিয়াতে যে সকল ব্যক্তি ফিরছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন স্লোভেনিয়া থেকে আর্তেম ভিক্টোরোভিচ দালসেভ ও অ্যানা ভ্যালেরেভনা দালসেভ; নরওয়ে থেকে মিখাইল ভ্যালেরিভিচ মিকুশিন; পোল্যান্ড থেকে পাভেল আলেকেসেয়েভিচ রুবসভ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে রোমান সেলেজনেভ, ভ্লাদিস্লাভ ক্লিউশিন ও ভাদিম কনোশেচেনক।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.