করোনা মহামারির সময় সৎকারের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে মরদেহ পোড়ানোর নির্দেশ দেওয়ায় মুসলিমদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। ২৩ জুলাই মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে বাধ্যতামূলক মরদেহ পোড়ানোর নির্দেশ দেওয়ায় ক্ষমা চেয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনায় মৃতদের মুসলিম রীতিতে কবর দেওয়াকে নিরাপদ বলেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তার পরও মরদেহ পোড়ানোর নির্দেশ দেওয়ায় এই ক্ষমা প্রার্থনা করে শ্রীলঙ্কা সরকার।
মুসলিমরা শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘিষ্ঠ। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, মৃতদের মক্কার দিকে মুখ করে কবর দেওয়া হয়। অপর দিকে বৌদ্ধ ও হিন্দুদের মৃতদেহ সৎকারে পোড়ানো হয়। মুসলিম কাউন্সিল অব শ্রীলঙ্কার হিলমি আহমেদ এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখন দুই শিক্ষাবিদ—মেথথিকা বিথানেগে ও চন্না জয়সুমানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করব। তাঁরাই তখন মরদেহগুলো পোড়ানোর জন্য বাধ্য করেছিলেন। আমরা ক্ষতিপূরণও চাইব।’
করোনা মহামারির সময় মরদেহ পোড়ানোর জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের প্রশাসন জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে পড়ে। চলতি জুলাই মাসে প্রকাশিত এক বইয়ে এ প্রসঙ্গে গোতাবায়া নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাইও গেয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তখন মরদেহ পোড়ানোর আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শ্রীলঙ্কা সফরের সময় বাধ্যতামূলক মরদেহ পোড়ানোর নীতি বন্ধ করে শ্রীলঙ্কা সরকার। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিক্ষোভের মুখে পড়ে দুই বছর আগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন গোতাবায়া।