11/22/2024 ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.২%
মুনা নিউজ ডেস্ক
১ জুন ২০২৪ ১১:১৮
ভারতেরপরিসংখ্যান অধিদপ্তর গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রকাশ করা তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ শতাংশের ওপরে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান চলমান লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির পক্ষে অনুকূল জনমত তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
গতকাল বিকেলে ভারতের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাবে বলে আশঙ্কা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, চতুর্থ প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চে ভারতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ওপরে ছিল। ফলে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে থাকলেও সামগ্রিকভাবে তা ৮ শতাংশের ওপরেই থাকল।
প্রবৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ লিখেছেন, মোদি সরকারের তৃতীয় দফায়ও প্রবৃদ্ধির এই গতি বহাল থাকবে। বিজেপি সরকার উৎপাদন বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেগুলোও কাজে এসেছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। বছরের শেষ প্রান্তিকে উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
ভারতের অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, জাতীয় আয় হিসাবের সময় আমদানিসহ আরও কিছু ব্যয় হিসাবে নেওয়া হয় না। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এক বছর ধরে কম। এতে ভারতের আমদানি ব্যয় কমেছে; এটা তাদের জন্য বাড়তি সুবিধা নিয়ে এসেছে।
তবে প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে। বিশেষ করে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, তার যথার্থতা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের একাংশ সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। চতুর্থ প্রান্তিকের পরিসংখ্যান নিয়ে তাঁরা কী বলেন, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। যদিও দু-একজন ইতিমধ্যে বলেছেন, এই পরিসংখ্যানের মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ভারতের প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান মানুষকে চমকে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ধর্মাকৃতি যোশী। ভারতের নীতি আয়োগের সাবেক চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রাজীব কুমারের বক্তব্য, বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলোকে পেছনে ফেলতে সব সম্ভাবনা ও অনুমান উড়িয়ে দিয়েছে এই পরিসংখ্যান।
এদিকে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গেলেও ভারতে ব্যক্তিগত ভোগের প্রবৃদ্ধি ভালো নয়। শেষ প্রান্তিকে ব্যক্তিগত ভোগ বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ। এই বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন কেউ কেউ। উদ্বেগের আরেকটি বিষয় হলো, নীতি সুদহার। ভোটের পর মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে সুদহার আরও বাড়াতে হতে পারে, আর তাতে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অর্থনীতির গতি বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। অবকাঠামো নির্মাণে সরকারি ব্যয় বাড়িয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ভারতকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষম হিসেবে গড়ে তুলতে মুঠোফোন, ইলেকট্রনিকস, ড্রোন ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে।
ভারতীয় জিডিপির ১৫ শতাংশ আসে কৃষি খাত থেকে। কিন্তু ভারতের কৃষকেরা কয়েক বছর ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচনের আগে পেঁয়াজসহ আরও কিছু অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্য রপ্তানিতে কেন্দ্রীয় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তার জেরে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.