11/23/2024 সিলেটে ২৯৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হওয়ায় সম্ভব হচ্ছে না ক্লাস নেয়া
মুনা নিউজ ডেস্ক
১ জুন ২০২৪ ১০:১৭
বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব এখনও কাটিয়ে ওঠেনি সিলেট অঞ্চল। বন্যাকবলিত এলাকার ৭১০টি বিদ্যালয়ের ২৯৮টি প্লাবিত হয়েছে অঞ্চলটির। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয়ে পানি ওঠায় গত বৃহস্পতিবার ৪৬৫টিতে ক্লাস করানো সম্ভব হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠানে আবার খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামীকাল রোববারও বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস করানো সম্ভব হবে না।
জেলার ৫৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬২টি প্লাবিত হয়েছে এবং ৩৮৬টিতে বৃহস্পতিবার শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। আর ১৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩৬টি প্লাবিত হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার ৭৯টিতে শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২৩টি বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এসব বিদ্যালয়ে ক্লাস হয়নি। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ৬০টি বিদ্যালয় ব্যবহার হয়েছে। এখনো বন্যায় প্লাবিত অর্ধেক বিদ্যালয়ে পানি রয়েছে। যে কারণে সেগুলোতে আগামীকাল রোববার ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না। উপজেলার ৪৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সবগুলোতেই বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার ক্লাস হয়নি। ছয়টি বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। আজ শনিবার কয়েকটি স্কুলে ক্লাস হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। এর মধ্যে আটটিতে আশ্রয়কেন্দ্র ছিল।
জৈন্তাপুরে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪৮টি বিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। আর ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সবগুলোই বৃহস্পতিবার বন্ধ ছিল। আজ শনিবার চারটি প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর আশ্রয়কেন্দ্র ছিল ২২টিতে।
কোম্পানীগঞ্জের ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার ক্লাস হয়নি। এর মধ্যে ৪৫টি স্কুল প্লাবিত হয়েছে। আর ১০টি বিদ্যালয়ে আগামীকাল রোববার ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না। আর উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০টি প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সবগুলো বিদ্যালয়ে ক্লাস চললেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একেবারে কম ছিল।
কানাইঘাটের ১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার শ্রেণিকার্যক্রম বন্ধ ছিল। বন্যার পানিতে ৫৬টি স্কুল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে পানি কমলেও কাল রোববার ছয়টি স্কুলে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না। আর উপজেলার ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিনটি প্লাবিত হয়েছে।
জকিগঞ্জের ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টির মাঠে পানি রয়েছে। বৃহস্পতিবারে চার-পাঁচটি বিদ্যালয় বাদে বাকিগুলোতে ক্লাস হয়েছে। প্লাবিত ১৬টি বিদ্যালয়ে কাল রোববারে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মাসুম মিয়া। আর ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দুটি প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসেনি।
কোম্পানীগঞ্জের গৌরীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল চন্দ্র শর্মা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে নৌকায় করে যেতে হয়েছে। বিদ্যালয়ের নিচতলায় ছিল দেড় ফুট পানি। যে কারণে শিক্ষার্থীরা আসেনি। এখনো বিদ্যালয়ে পানি। শিক্ষার্থীরা না আসতে পারলেও আমাদের তো যেতে হবে। তবে বিদ্যালয় থেকে পানি নামতে হয়তো আরও দুই-তিন দিন লেগে যাবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশেদ বলেন, ‘জেলার পাঁচটি উপজেলার অনেকগুলো স্কুল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র। যেগুলোর অনেকটায় মানুষ উঠেছে। পানি বাড়ার কারণে বৃহস্পতিবার এই উপজেলাগুলোর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করানো সম্ভব হয়নি। ছোট বাচ্চারা স্কুলে আসতে পারেনি। কাল রোববারও অনেক স্কুলে ক্লাস করানো সম্ভব হবে না। যেগুলো পানিতে ডুবেছে, সেগুলোর ক্ষয়ক্ষতি এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা ওইগুলো পরিদর্শন করে সব জানার চেষ্টা করব।’
সিলেটের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘সিলেটে বন্যার কারণে অনেক এলাকায় পানি উঠেছে। যে কারণে শিক্ষাকার্যক্রম অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক স্কুলে পানি উঠেছে এবং অনেক জায়গা থেকে নেমেও গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। আমাদের উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা সেগুলো আমাদের জানাবেন।’
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.