11/27/2024 বাংলাদেশের শিল্প রক্ষায় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানো প্রয়োজন: ব্যবসায়ী
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৫ মে ২০২৪ ১১:৪০
প্লাস্টিকশিল্পের মৌলিক কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, প্লাস্টিকের সব মৌলিক কাঁচামালই পেট্রোকেমিক্যালজাত পণ্য; যার শতভাগ আমদানি করতে হয়। আর গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে এসব কাঁচামালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে মৌলিক কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানো প্রয়োজন।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিবেচনার জন্য সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ)। সংগঠনটি জানায়, দেশে প্লাস্টিক খাতে স্থানীয় বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নতুন নতুন বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশীয় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক কমানো, বিদেশি পণ্য আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি ও আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে পণ্য আমদানি বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে এসব কাঁচামালের মূল্য অনেক বেড়েছে।
বাজেট প্রস্তাবে বিপিজিএমইএ বলেছে, প্লাস্টিক খাতে বহুল ব্যবহৃত একটি মৌলিক কাঁচামাল ফিলার মাস্টার ব্যাচে আগে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ছিল। গত বছর এই পণ্যের এইচএস কোডের নতুন বিন্যাসের ফলে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ শতাংশ হয়েছে। এটিকে আবার ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের প্লাস্টিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি করা পণ্যের (কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ) ওপর ৩ শতাংশ অগ্রিম কর রয়েছে। ২০২২-২৩ সালের বাজেটে এই অগ্রিম কর আরোপ করা হয়। এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, করোনার পর প্লাস্টিক খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ কিংবা রুগ্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ৩ শতাংশ অগ্রিম কর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই অনেক প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে সরকারি এক প্রজ্ঞাপন (এসআরও) অনুসারে দেশের বস্ত্রশিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণ আমদানিতে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক দেয়; তবে তারা মূল্য সংযোজন কর (মূসক), সম্পূরক শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) অব্যাহতির সুবিধা পায়। প্লাস্টিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও একই সুবিধা চায়। বিপিজিএমইএ বলেছে, এটা করা হলে প্লাস্টিক খাত অর্থনীতিতে আরও ভালো অবদান রাখতে পারবে।
বিদেশে তৈরি প্লাস্টিক পণ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য রয়েছে। এর সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপের প্রস্তাব করেছে প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি। পাশাপাশি বিদেশি প্লাস্টিক পাইপে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং বিদেশি টুথব্রাশ ও প্লাস্টিক সিস্টার্নসে ন্যূনতম ৫ শতাংশ আরডি আরোপের প্রস্তাব করেছে বিপিজিএমইএ।
সংগঠনটি বলেছে, বর্তমানে দেশে প্লাস্টিকের তৈজসপত্র, দরজা-জানালা, আসবাব, বাক্স, ক্যারেট, ট্রেসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি হচ্ছে। বেশির ভাগ পণ্য তৈরিতে দেশীয় স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে; যারা অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও পণ্য রপ্তানি করছে।
তবে ভারত, চীনসহ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ থেকে সস্তা ও নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্য আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে দেশে আসছে জানিয়ে বিপিজিএমইএ বলেছে, তাতে দেশীয় উৎপাদকেরা বাজারে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে। এ কারণে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ হারে আরডি আরোপ করা প্রয়োজন।
এ ছাড়া বাজেট প্রস্তাবে আমদানি করা প্লাস্টিকের খেলনায় ট্যারিফ ভ্যালু বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, দেশে উন্নত মানের প্লাস্টিকের খেলনা তৈরি হচ্ছে। তবে কাঁচামালের আমদানি ব্যয় ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে আমদানি করা সস্তা খেলনার সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণে ট্যারিফ ভ্যালু বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
বাজেট প্রস্তাবে বিপিজিএমইএ আরও বলেছে, প্লাস্টিকশিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। শ্রমঘন এ খাতে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। প্রতিবছর খাতটিতে ২০-২২ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। যথাযথ নীতি সহায়তা পেলে আগামী পাঁচ বছরে এ খাত থেকে এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রস্তাবিত প্লাস্টিক শিল্পনগরী দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.