11/23/2024 ক্রমশ সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৯ মে ২০২৩ ০৯:০২
নিউইয়র্ক সিটি ক্রমশ সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কার বার্তা দিয়েছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা।
আকাশছোঁয়া ভবনরাজিতে ভরে যাচ্ছে নিউ ইয়র্ক সিটি। নিউ ইয়র্ক সিটির ১০ লাখের বেশি ভবন রয়েছে। এগুলোর মোট ওজন প্রায় ১.৭ ট্রিলিয়ন পাউন্ড। আর এর ভার সামলাতে পারছে না ভূভাগ।
ভূ-বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি তার নিজের ভারে তলিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। ভবনগুলোর চাপে নগরীটি প্রতি বছর এক থেকে দুই মিলিমিটার করে পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে, কোনো কোনো এলাকা আরো বেশি হারে দেবে যাচ্ছে। গবেষকরা সম্প্রতি তাদের গবেষণায় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছেন। পরিণতিতে ডুবে যাচ্ছে বিগ অ্যাপেল।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটি নিয়ে এই গবেষণা পত্রে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, মূলত দুটি কারণে নিউইয়র্ক সিটি ডুবতে বসেছে। এক হল এই শহরের নির্মাণের ঘনত্ব। আর দুই হল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি। জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে প্রতিদিন সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, তাতেই মহাপ্রলয়ের ইঙ্গিত পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রধান গবেষক ও ভূতত্ত্ববিদ টম পারসন্সের তথ্যমতে, সাধারণ চোখে এমনটা কোনো তাৎপর্যপূর্ণ মনে না হলেও ক্রমাগত দেবে যাওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিউ ইয়র্ক সিটি চরমভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, ‘নিউ ইয়র্ক বন্যার বিপদের মুখে রয়েছৈ। উত্তর আমেরিকার আটলান্টিক উপকূলজুড়ে বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে নিউ ইয়র্কের সাগরের স্তর বাড়ার তিন থেকে চার গুণ শঙ্কায় রয়েছে। আর নিউ ইয়র্কের ৮৪ লাখ লোক ভয়াবহ বিপদের মধ্যে রয়েছে।’
অথচ মাত্র এক দশক আগেও নগরী এমন সমস্যায় ছিল না।
সমীক্ষাটিতে দেখা যায়, লোয়ার ম্যানহাটন বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া ব্রুকলিন ও কুইন্স উভয় অংশকে নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এসব এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে।
ওই গবেষক লিখেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুটি হ্যারিকেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে অনেক বেশি ক্ষতি করেছে। ২০১২ সালে হ্যারিকেন স্যান্ডি নগরীতে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। আর ২০২১ সালের হ্যারিকেন এডার ফলে এত বৃষ্টি হয়েছিল যে পয়োঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থাই ভেঙে পড়েছিল।
তিনি বলেন, এখন আগের চেয়েও হ্যারিকেনে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে গেছে। গ্রিন হাউস গ্যাস দৃশ্যত প্রাকৃতিক বাতাসপ্রবাহকে বাধা দিচ্ছে। আর এতে করে ভয়াবহ হ্যারিকেন আঘাত হানার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গবেষণায় বলা হয়, নিউ ইয়র্কের অনেক রিয়েল এস্টেট কিন্তু এসব হুঁশিয়ারি আমলে না নিয়ে বরং আকাশচুম্বি ভবন নির্মাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়, বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়া নগরীগুলোর মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটি রয়েছে তৃতীয় স্থানে। আর হ্যারিকেন স্যান্ডির পর নির্মিত ৬৭ হাজার ৪০০ ভবনের মধ্যে ৯০ ভাগই বন্যা-প্রতিরোধক মানে নির্মিত হয়নি।
সূত্র : নিউ ইয়র্ক পোস্ট।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.