11/22/2024 ডলারের আধিপত্য কমাতে জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টায় ৩০ দেশ
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৭ মে ২০২৩ ১১:৫১
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের গুরুত্ব অপরিসীম। যুক্তরাষ্ট্রের এই মুদ্রা ব্যতীত বিশ্ববাজারে বাণিজ্য করা বলা চলে অসম্ভব। এটি বর্তমান বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত মুদ্রা। সারা বিশ্বে এই মুদ্রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘হার্ড কারেন্সি’ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক দেনা-পাওনা মেটানোর মুদ্রা ছাড়াও এটি বহুল প্রচলিত একটি ‘রিজার্ভ কারেন্সি’। ডলারের এই একাধিপত্য থেকে পরিত্রাণ পেতে চায় অনেক দেশ। সে জন্য এবার জোটবদ্ধ হতে যাচ্ছে ৩০টি দেশ। তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদীয়মান অর্থনৈতিক জোট ‘ব্রিকস’-এর মুদ্রা গ্রহণ করতে চায়।
চীনের গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক ব্লুমবার্গের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক ডজনেরও বেশি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। জোট আরও শক্তিশালী হবে। কারণ, তাদের জিডিপি যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির চেয়ে এগিয়ে থাকবে। এটি ডলার ও ইউরোসহ অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিশালী মুদ্রাকে পেছনে ফেলতে পারে। কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলো ডলারের ওপর তাদের নির্ভরতা শেষ করতে চায়। সুতরাং এটা বলাই যায়, ব্রিকস আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে একটি নতুন বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার সূচনা করার জন্য বর্তমানে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে।
সবশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২৫টি দেশ ব্রিকসে যোগ দিতে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য নতুন মুদ্রা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বেলারুশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কাজাখিস্তান, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সেনেগাল, সুদান, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়ে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচটি দেশ নিয়ে মূলত ব্রিকস গঠিত। এর সঙ্গে আরও ২৫ দেশ যোগ দিলে এই জোট ৩০ দেশে সম্প্রসারিত হবে। বলা যায় ৩০টি দেশ এখন মার্কিন ডলারকে বৈশ্বিক রিজার্ভ ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একাট্টা হতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত এই জোটে যোগ দিতে এবং নতুন মুদ্রা গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে আরও অনেক দেশ। এ বছরই জোটটি প্রসারিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জোটে আরও দেশের যোগদানের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনে নেওয়া হতে পারে। সম্মেলনটি আগামী আগষ্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে।
যদি এতগুলো দেশ ডলার ত্যাগ করে এবং একটি নতুন মুদ্রা দিয়ে আন্তঃসীমান্ত লেনদেন শুরু করে, তবে তা হবে ডলারের ওপর একটি বড় প্রত্যাঘাত। এতে বিশ্বব্যাপী দুর্বল হতে পারে ডলার এবং এর ঘাটতি পুনরুদ্ধার করার কোনো উপায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
যে দেশগুলো ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহী তারাও তেল সমৃদ্ধ দেশ। সুতরাং, এই জোট ইউরোপীয় দেশগুলোকে তেলের জন্য নতুন মুদ্রা দিয়ে অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করতে পারে, ডলার নয়। আর এটি ঘটলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো খাতের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.