11/23/2024 ভারত থেকে নিকারাগুয়ায় মানব পাচারের মূল হোতা শনাক্ত!
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৫
মানব পাচার চক্রের হাতে পড়ে মধ্য আমেরিকা হয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় ঢুকতে পারে এই সন্দেহে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে নিকারাগুয়াগামী একটি বিমানকে ফ্রান্সে জরুরি অবতরণ করানো হয়। বিমানটির সব যাত্রীই ভারতের। ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, এই পুরো বিষয়টির মূল হোতা হতে পারেন হায়দরাবাদের শশী কিরণ রেড্ডি। এই রেড্ডিকে ২০২২ সালে গুজরাটে ডিঙ্গুচা গ্রাম থেকে মানব পাচারের অভিযোগে আটক করেছিল। কিন্তু পরে প্রমাণের অভাবে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ভারতের গুজরাট রাজ্যের গান্ধীনগরের ডিঙ্গুচা গ্রামের একটি পরিবারকে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা অবৈধভাবে কানাডা সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু সেই সেই দম্পতি ও তাদের দুই সন্তান ঠান্ডায় জমে গিয়ে কানাডা সীমান্তেই মারা গিয়েছিল।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, ফ্রান্সে যে বিমানটি অবতরণ করানো হয়েছে সেই বিমানটি ৩০৩ যাত্রীর মধ্যে ৯৬ জনই গুজরাটের। ফলে, এই ঘটনায় রেড্ডির যুক্ত থাকার বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দারা প্রায় নিশ্চিত। যদিও এখনো তাঁরা কোনো অকাট্য প্রমাণ পেশ করেননি।
সূত্রটি জানিয়েছে, রেড্ডি ১৫ বছর ধরেই একটি মানব পাচার চক্র চালিয়ে আসছেন। মূলত তিনিই দুবাই থেকে নিকারাগুয়া অভিমুখী ফ্লাইটটির ব্যবস্থা করেছিলেন। সেখান থেকে তাদের স্থল ও সমুদ্রপথ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হতো। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বিগত দুই মাসে নিকারাগুয়া হয়ে প্রায় ৮০০ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে। তাদের পাঠাতে এমন আরও ৮ থেকে ১০টি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
৩০৩ ভারতীয় যাত্রীসহ ফ্রান্সে আটক বিমানকে উড্ডয়নের ছাড়পত্র, গন্তব্য অজানা৩০৩ ভারতীয় যাত্রীসহ ফ্রান্সে আটক বিমানকে উড্ডয়নের ছাড়পত্র, গন্তব্য অজানা
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ডিঙ্গুচা মামলায় দেখা গেছে—ভুক্তভোগী জগদীশ প্যাটেলের ভাই মহেন্দ্র ওরফে মহেন্দ্র এই বিপজ্জনক যাত্রার আয়োজন করেছিলেন। মহেন্দ্র কিরণ রেড্ডির সঙ্গে কাজ করছিলেন এবং তাঁরা গুজরাট থেকে হাজার হাজার ভারতীয়কে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছেন। রেড্ডি জগদীশ ও তাঁর পরিবারের জাল নথি তৈরি করে তাঁদের মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করতে সাহায্য করার জন্য স্থানীয় মানব পাচারকারীদের সঙ্গেও সমন্বয় করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ডিঙ্গুচার বাসিন্দা জগদীশ, তাঁর স্ত্রী বৈশালী, তাঁদের দুই সন্তান—কন্যা বিহঙ্গী ও ছেলে ধার্মিকের মরদেহ পাওয়া যায় কানাডার ম্যানিটোবার এমারসনের কাছে। যেখানে তাঁদের মরদেহ পাওয়া যায় সেই জায়গাটি মার্কিন সীমান্ত থেকে মাত্র ১২ মিটার দূরে ছিল।
মূলত, পরিবারটি ভারতীয়দের একটি বড় দলের সঙ্গে সীমান্ত পাড়ি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা মূল দলটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সে সময় সীমান্ত এলাকায় তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মূলত এত কম তাপমাত্রার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.