11/23/2024 ‘বাইডেন-শি’ বৈঠকে এক চুক্তি ও দুই ঘোষণা
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:০১
আলোচিত বৈঠকে একাধিক বিষয়ে ঐকমত্য ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৈশ্বিক পরাশক্তির এই দুই নেতা বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চার ঘণ্টার এক দীর্ঘ বৈঠকে মিলিত হন। প্রথা অনুযায়ী বৈঠক শেষে দুই নেতা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন, যা মার্কিন কর্তৃপক্ষ বৈঠকের আগে কল্পনাও করেননি বলে মন্তব্য করেছে সিএনএন।
বৈঠকে সামরিক যোগাযোগ পুনরুদ্ধার ও মতানৈক্যের সময় জো বাইডেন ও শি জিনপিং ফোনালাপের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। যেকোনো সংকটকালে দুই নেতা পরস্পর ফোনালাপের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও দুই নেতার বৈঠকে ‘ফেন্টানাইল উৎপাদন রোধ’ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির আওতায় এখন থেকে চীনা কর্তৃপক্ষ ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনকারী আফিম জাতীয় বিশেষ এ রাসায়নিক পণ্যটি বৈধ কোনো কোম্পানি ছাড়া কাউকে সরবরাহ করবে না।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক হিসেবে ফেন্টানাইল ব্যবহারে সহজলভ্যতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাইডেন। মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে সিএনএন জানায়, লম্বা বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বেশি কথা বলেছেন এবং শি জিনপিং মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। তিনি খুব কম কথা বলেছেন।
ইউক্রেন-রাশিয়া, চীন-তাইওয়ান ও হামাস-ইসরাইলের সংঘাতের মুহূর্তে গত এক দশকে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সবচেয়ে উদ্বেগের জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। এমন মুহূর্তে দুই নেতার বৈঠক বিশ্বব্যাপী তীব্র আকর্ষণ তৈরি করে। দুই নেতার আলোচিত বৈঠকে উল্লিখিত বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠককে সবচেয়ে গঠনমূলক এবং ফলপ্রসূ আখ্যা দিলেও চীনা প্রেসিডেন্টকে এখনও একজন স্বৈরশাসক মনে করেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি তার উদ্বেগের কথা সরাসরি জানিয়েছেন জিনপিংকে।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে চীনের বিরুদ্ধে দমননীতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৈঠকে বাইডেনকে তিনি (শি) বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই এবং যুক্তরাষ্ট্রের চীনকে দমন করার পরিকল্পনা করা উচিত নয়।’
বিপরীতে বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বিস্তারে ইরানের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে চীনা প্রেসিডেন্টকে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। জবাবে শি জিনপিং তার উদ্বেগের কথা ইরানকে অবহিত করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সামরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস এ উপলক্ষে চীন সফরেও গিয়েছিলেন। অন্যদিকে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্যারাগুয়ে সফরকালে তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই দুই দফা যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতি করেন। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় চীন সামরিক যোগাযোগ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে এবং তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে।
যুক্তরাষ্ট্রে তাইপে নেতার যাত্রাবিরতিকে ‘উসকানিমূলক’ আখ্যা দেয় চীন। মূলত এরপর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক সবচয়ে তলানিতে গিয়ে পৌঁছে। ক্যালিফোর্নিয়া বৈঠকে উভয় দেশ পুনরায় সামরিক যোগাযোগ চুক্তি ও শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.