11/25/2024 ওআইসির সম্মেলনে ফিলিস্তিনি নারীদের দুর্দশার চিত্র
মুনা নিউজ ডেস্ক
৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪
মুসলিম বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) আয়োজনে সৌদি আরবের জেদ্দায় তিন দিনব্যাপী (৬-৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হচ্ছে আজ। ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এই সম্মেলনে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
এতে মুসলিম নারীদের সাফল্যের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের শিক্ষার কথা বলা হয়। তা ছাড়া সম্মেলনে ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা শীর্ষক জেদ্দা দলিল’ প্রকাশ করা হয়।
সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতিসংঘের উপমহাসচিব আমিনা মোহাম্মদ, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি, গিনির সাবেক সাবেক ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ড. কুতুব মুস্তফা সানো, উগান্ডার সাবেক অর্থনীতি ও পরিকল্পনা বিষয়ক প্রথম নারী মন্ত্রী ড. সায়েদা বুমবা, তাজিকিস্তানের সাবেক পার্লামেন্ট স্পিকার ড. খায়রিনিসো ইউসুফিসহ মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তাঁরা তাঁদের বক্তব্যে ফিলিস্তিনি নারীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।
এছাড়াও গবেষণা প্রবন্ধ পাঠ করেন- আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী বিষয়ক উপদেষ্টা ড. নাহলা আল-সাইদি, মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. জুলেখা কামারুদ্দিন, সৌদি আরবের মানবাধিকার কমিশনের প্রথম নারী প্রধান ড. হালা মাজয়াদ আল-তুয়াইজিরি, ওআইসির মানবাধিকার কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নুরা আল-রাশুদ, আবুধাবির মোহাম্মদ বিন জায়েদ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. রাদওয়ান আল-সায়িদ, চাদের কিং ফয়সাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আয়েশা তোহা আবদুল জলিল, ফ্যামিলি ওয়াচ ইন্টারন্যাশনালের প্রধান ড. শারোন সালাটরসহ আরো অনেকে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ওআইসি মহাসচিব ড. হুসাইন ইবরাহিম তোহা বলেন, ‘সম্মেলনটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখোমুখি হচ্ছে, বিশেষত গাজার নারী, শিশু, বয়স্ক ও সাধারণ মানুষ বোমাবর্ষণে নিহত হচ্ছে।
ভয়াবহ এই ট্র্যাজেডির সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো তাদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যককে নীরবে হত্যা করা হচ্ছে। গাজার চলমান ট্র্যাজেডিতে সবাই সম্মেলনে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। পবিত্র মসজিদুল আকসা, ফিলিস্তিনি জনগণ, বিশেষত নারীদের সুরক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যেন ইসরায়েলি দখলদারিতে মানুষ নিজ ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে।’
এদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের উপমহাসচিব আমিনা মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলে ও পুরো বিশ্বে নিজেদের সামর্থ্যমতো কাজ করে ভয়াবহ সহিংসতা ও যন্ত্রণার অবসান করতে চাই, বিশেষত এই সময়ে সবাইকে নিয়ে শান্তির টেবিলে বসা খুবই জরুরি।
মুসলিম বিশ্বাসের দাবি অনুসারে, প্রয়োজনের সময় আমাদের প্রতিবেশীদের যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’ এ সময় তিনি ইসলামে নারীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শিক্ষা, অর্থনীতিসহ শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের ৩২ দিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে চার হাজার ১০৪টি শিশু ও দুই হাজার ৬৪১ জন নারী রয়েছে। আহত হয়েছে ২৫ হাজারেরও বেশি লোক।
নিহতদের মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের ৮৮ জন কর্মী ও ৩৬ জন সাংবাদিক। নৃশংস হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে প্রায় সব দেশ সরব হলেও যুদ্ধবিরতিতে বিশ্বনেতাদের চরম অনীহা দৃশ্যমান। পরিস্থিতি চরম সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেকে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো শুরু করেছে। এদিকে আগামী ১২ নভেম্বর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি সম্মেলন ডেকেছে ওআইসি।
সূত্র : আরব নিউজ ও ওআইসি
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.