11/23/2024 মৃতদের স্মরণ করার আজব উৎসব ‘ডে অব দ্য ডেড’
মুনা নিউজ ডেস্ক
৩ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৪৬
হাজারো বছরের পুরোনো এক ঐতিহ্য এটি। দিয়া দে লস মুয়েরতস নামের মেক্সিকোর এই রীতি ইংরেজিতে পরিচিত ‘ডে অব দ্য ডেড’ নামে। মৃতদের স্মরণ করে ও শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করা হয় এটি। তবে এ সময় মানুষ মোটেই দুঃখকাতর হয় না বরং থাকে উৎসবের আমেজ।
১ নভেম্বর শুরু হয় ডে অব দ্য ডেড, শেষ হয় নভেম্বরের ২ তারিখ। রীতিটি পালন করা ব্যক্তিরা বিশ্বাস করেন এ সময় মৃতদের আত্মা বাড়িতে ফিরে আসে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য।
মূলত এটি মেক্সিকোর রীতি বা উৎসব হলেও অনেক জায়গাতে এমনকি উত্তর বা দক্ষিণ আমেরিকার বাইরেও দিনটি নিজেদের মতো করে উদ্যাপিত করে মানুষ। ফিলিপাইনে এটি পরিচিত উনদাস নামে এবং নভেম্বরের প্রথম দুই দিনই উদ্যাপিত হয়। মেক্সিকোর মতো ফিলিপাইনের মানুষও এ দিনে বা দিন দুটিতে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া প্রিয় মানুষদের সমাধিস্থলে যান এবং তাঁদের জন্য বেদির মতো তৈরি করেন।
হাইতিতে দিনটিকে ডাকা হয় ফেত জেদে বা মৃতদের উৎসব নামে। সাদা, কালো আর বেগুনি পোশাকে সজ্জিত হন তখন মানুষ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় দিনটি উপলক্ষে প্যারেডের আয়োজনও হয়।
বলা হয় আমেরিকার (দক্ষিণ আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকা) বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসীদের থেকে এই রীতিটি এসেছে। বিশেষ করে বলতে হয় অ্যাজটেকদের কথা। মিচাইহুইতো নামের মৃতদের শ্রদ্ধা জানানোর একটি উৎসব পালন করতেন অ্যাজটেকরা।
পরবর্তীতে এসব এলাকায় স্প্যানিশদের আগমন ঘটে। খ্রিস্টধর্মালম্বীদের পালন করা মৃতদের সঙ্গে সম্পর্কিত আচার অল সেইন্টস ডে এবং অল সোলস ডের সঙ্গে আদিবাসীদের এই ঐতিহ্য মিলিয়ে তাঁরা তৈরি করে নতুন এক উৎসব বা রীতি দিয়া দে লস মুয়েরতস।
এখন জেনে নেওয়া যাক দিনটিতে কী করা হয়। অনেকে মৃত আত্মীয় এবং প্রিয়জনদের সমাধিতে গিয়ে সম্মান জানান। কিন্তু তারা শোক করতে যান না। বরং সমাধি এবং সমাধিফলক পরিষ্কার করে বা ফুল দিয়ে সাজান। কেউ কেউ প্রার্থনা করেন, অন্যরা গান বাজান।
পরিবেশ প্রায় একটি পার্টির মতো। সংগীত এবং নানা খাবার-দাবারের আয়োজন থাকে। মৃত প্রিয়জনের স্মৃতি জাগিয়ে রাখতে তাঁদের নিয়ে নানা গল্প বলেন একজন আরেকজনকে।
মেক্সিকোর কোনো কোনো শহরে প্যারেড এবং উৎসবের মাধ্যমে উদ্যাপন করে দিনটি। অনেকে তাদের মুখে এভাবে রং করে যেন দেখতে খুলি বা করোটির মতো মনে হয়। নানা ধরনের অদ্ভুত পোশাকও গায়ে চাপান তাঁরা।
ডে অব দ্য ডেড উদ্যাপনের জন্য বেদি তৈরি করা হয় বিভিন্ন বাড়িতে। অফরেন্দা নামে পরিচিত এই বেদি স্কুলসহ অন্যান্য জায়গায়ও স্থাপন করা হয়। বেদির ওপরে থাকে মৃত প্রিয় মানুষটির ছবি। বিভিন্ন নকশা করা বর্ণিল সব টিস্যু পেপার বা পেপেল পিকাডোও শোভা পায়। বেদিতে থাকে মোমবাতি আর চিনির তৈরি খুলিও।
কখনো কখনো লবণ দিয়ে ক্রুশের মতো তৈরি করে বেদির আশপাশেই রাখা হয়। কোনো কোনো পরিবার মৃত ব্যক্তির প্রিয় খাবার কিংবা পোশাক, বই এসবও রাখেন। বলা চলে সবকিছু মিলিয়ে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে দিনটি উদ্যাপন করে মানুষ।
সূত্র : সিএনএন
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.