11/23/2024 ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির জন্য ‘ভূমিকম্প’: আইএমএফ
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:৪০
ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার যুদ্ধকে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির জন্য ‘ভূমিকম্প’ বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মধ্যপ্রাচ্য ও কেন্দ্রীয় এশিয়া শাখার প্রধান নির্বাহী জিহাদ আজৌর। আজ ১৩ অক্টোবর, শুক্রবার মরক্কোর রাজধানী রাবাতে আইএমএফ এশিয়া ও আফ্রিকা শাখার সম্মেলন শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও কেন্দ্রীয় এশিয়া শাখার প্রতিনিধি হিসেবে এই সম্মেলনে রয়েছেন জিহাদ আজৌরও।
সম্মেলনে এক প্যানেল আলোচনায় আইএমএফের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তার অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের স্বল্পোন্নত অঞ্চলগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দিন দিন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, কারণ এখানে এখনও অনেক মৌলিক প্রশ্ন বা সমস্যা রয়ে গেছে— যেগুলোর মীমাংসা হয়নি। এই সপ্তাহের শুরু হতে না হতেই তেলের দাম ৫ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে… বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যে সংঘাত চলছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে।’
এই ব্যাপারটি মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে তিনি বলেন, তেলের বাজার যে মাত্রায় ও গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে, অন্যান্য পণ্য ও পরিষেবার বাজারের ক্ষেত্রে তেমন ঘটছে না। মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের যে স্বল্প ও মধ্যম মেয়াদী প্রভাব পড়বে, তা অনেক বড়…এটা রীতিমতো একটা ভূমিকম্প।’
আইএমএফের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে স্বর্ণের দামও; আর এই দুই পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আরও শক্তিশালী হচ্ছে ডলার। এই যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, সেক্ষেত্রে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়া শুরু করবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জিহাদ আজৌর।
২ বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি শেষে ৭ অক্টোবর শনিবার ভোর রাত থেকে দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এবং হামাসের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সূর্যের আলো পুরোপুরি ফোটার আগেই ৩ হাজারেরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছিল ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে।
কাছাকাছি সময়ে মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডারে চেপে হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমাণ্ডের কার্যালয়ে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের বন্দি ও জিম্মি করার পাশাপাশি ওই কমান্ডের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মূল কমান্ড ও অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মোটরসাইকেল ও জীপে করে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন হামাসের আরও কয়েক শ’যোদ্ধা।
গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি ও পূর্বপ্রস্তুতি না থাকার কারণে হামাসের হামলার পর প্রথম দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিল ইসরায়েল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই যুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে ফিরে আসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ হচ্ছে আল আকসা অঞ্চলে। ইসরায়েলের সরকার ইতোমধ্যে হামাসকে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
গত ছয় দিনের যুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৮শ’রও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকের সংখ্যা ১ হাজার তিন শতাধিক এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৭ জন। দুই অঞ্চলের সামরিক সদস্যদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু, নারী ও বেসামরিক লোকজনও রয়েছেন নিহতদের এ তালিকায়।
সূত্র : আল আরাবিয়া
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.