04/19/2025 দানবীয় আকার নিয়েছে ওজোন স্তরের ছিদ্র
মুনা নিউজ ডেস্ক
৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০৫
প্রাণিজগৎকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষার ঢাল বলা হয় পৃথিবীর ওজোন স্তরকে। ১৯৮০ সালের দিকে ধারা পড়ে, মানুষের সৃষ্ট অতিমাত্রার রাসায়নিক ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাসের কারণে ওজোন স্তরের বিভিন্ন জায়গায় ফুটো তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ফুটোটি দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিকা অংশে।
বিভিন্ন গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন, উত্তর গোলার্ধে ছিদ্র অংশটি পুরোপুরি পুনরুদ্ধার হবে ২০৩০ সাল নাগাদ আর অ্যান্টার্কটিকা অংশে সময় লেগে যেতে পারে ২০৬০ পর্যন্ত। কিন্তু হয়েছে এর উল্টো।
বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ডাটা পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অ্যান্টার্কটিকা অংশের ফুটো তো ভরেইনি, উল্টো ক্রমে তা দানবীয় আকার নিচ্ছে। এই ছিদ্র বড় হতে হতে এখন এক কোটি ৩০ লাখ বর্গমাইল (২ কোটি ৬০ লাখ কিলোমিটার) ছাড়িয়েছে; যা আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম দেশ ব্রাজিলের আকারের অন্তত তিন গুণ।
মেইল অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ওজন স্তরের এই ফুটোর পরিমাপ করা হয়। কারণ ওজোন স্তরের ক্ষয় সাধারণত মধ্য অক্টোবরের দিকে হয় না। তবে বিজ্ঞানীরা ঠিক নিশ্চিত নন, কেন এ বছর ওজোন স্তরের গর্তটি এত বড় হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশ টোঙ্গা উপকূলে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সঙ্গে এর সংযোগ আছে।
কারণ আগ্নেয়গিরির এই বিস্ফোরণটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার সমান এবং গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিস্ফোরণ।
ইউরোপের কোপারনিকাস অ্যাটমোসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের বিজ্ঞানী ড. অ্যান্টজি ইন্নেস বলেন, ওজোন স্তরের ফুটোর আকার নিয়মিতভাবে ওঠানামা করে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর অ্যান্টার্কটিকায় এটি ২ কোটি ৬০ লাখ কিলোমিটার আয়তনে পৌঁছেছে। ধারণা করা হচ্ছে, টোঙ্গা উপকূলে সাগরের গভীরে ডুবো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এর জন্য দায়ী। কারণ ওই বিস্ফোরণ বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগ স্ট্রাটোস্ফিয়ারে প্রচুর জলীয় বাষ্প ছুড়ে দিয়েছিল। এই জলীয় বাষ্প মেরু স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক মেঘ তৈরি করতে পারে যেখানে প্রচুর সিএফসি তৈরি হওয়া সম্ভব।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ছয় মাইল ওপরে ওজোন স্তরের অবস্থান। অক্সিজেন অণুর এক বিশেষ রংহীন রূপ এই ওজোন। মূলত এটি পৃথিবীকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। অতিবেগুনি রশ্মির কারণে হতে পারে ত্বকের ক্যান্সার, চোখের সমস্যা বা ফসলের ক্ষতি। ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে ওজোন স্তরের ক্ষতিটি ছিল সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে প্রতি দশকে ওজোন স্তরের ফুটো বাড়ছে ৩ শতাংশ হারে।
সূত্র : ওয়াল্ড ইকোনোমিক ফোরাম
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.