11/23/2024 দরজায় কড়া নাড়ছে কোভিডের থেকে ভয়ংকর মহামারী ‘ডিজিজ এক্স’
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৫০
কোভিড মহামারীর থেকেও ভয়াবহ আরও একটি মহামারী কড়া নাড়ছে দরজায়। বলা হচ্ছে, নতুন যে জীবাণুর কারণে পরবর্তী মহামারী, সেটিতে নাকি পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। বলা হচ্ছে, নতুন মহামারী যদি আসল সিনেমা হয়, তাহলে কোভিড ছিলো সেটির ট্রেলার মাত্র। কারণ কোভিড বা করোনার চাইতেও অনেক বেশি মারণক্ষমতা থাকছে নতুন জীবাণুটির।
ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করা একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী এমন সতর্ক বার্তাও দিয়েছেন, আবার এমনটাও অসম্ভব নয় যে, হয়তো বিশ্বের কোথাও, কোনও এক প্রান্তে ইতিমধ্যেই সূচনাও হয়ে গিয়েছে সেই মহাবিপর্যয়ের। এরইমধ্যে সেই বার্তা পৌঁছে গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে। আর সংস্থাটিও সেই খবর নাকি বিশ্বের দেশে দেশে সতর্কবার্তা হিসাবে পাঠিয়েও দিয়েছে। বলেছে, এটি হতে পারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মহামারী।
এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও সবাইকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে অতিসংক্রামক করোনা ভাইরাস। ভয়ংকর সেই ভাইরাস টানা দু’বছর উত্তরোত্তর মিউটেশন হয়। এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতি। সংক্রমণেরও ঝাঁজ যেমন বেশি, মৃত্যুর হারও তত বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, কোভিডে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু, ‘ডিজিজ এক্স’ নামে নতুন যে জীবাণু আসছে, সেটি আরও বেশি ভয়ংকর। অতি বেশি সংক্রমণশীল। নতুন এই ডিজিজ এক্স জীবাণুটি নাকি ছাপিয়ে যেতে চলেছে আগের সব রেকর্ডকে। এমনটাই দাবি করেছেন, স্বয়ং ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডেম কেট বিংহাম।
তিনি জানান, কোভিড থেকে সাত গুণ বেশি শক্তিশালী ‘ডিজিজ এক্স’। এর দাপটে মৃত্যু হতে পারে কমপক্ষে পাঁচ কোটি মানুষের।
কেট বিংহাম স্প্যানিশ ফ্লু’র সঙ্গে ডিজিজ এক্সের মৃত্যুর হার তুলনা করেছেন। ২০২০ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এই গবেষক ডেইলি মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নতুন জীবাণুটি ১৯১৯ থেকে ১৯২০ সালের স্প্যানিশ ফ্লুতে যে ধরনের তাণ্ডব চালিয়েছিলো, ঠিক তেমনই প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, নতুন এই জীবাণুকে ‘ডিজিজি এক্স’ নাম দিয়ে বলেছে, এটি হতে পারে কোন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক।
সংস্থাটি আরও সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নতুন জীবাণুকে বশে আনার কোনো চিকিৎসা বা দাওয়াই এখনও বিশ্বে কারও হাতে সেই। কেট বিংহামও উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছেন, এরিমধ্যে হয়তো কোথাও ডিজিজ এক্সের জন্য দায়ী ভাইরাসটির জন্ম হয়ে গেছে। যার সংক্রমণে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর মতোই গোটা বিশ্বে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের প্রাণ সংহার হতে পারে। তিনি বলেন, আমি ভীষণই আতঙ্কতি এই নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশে বিদ্যমান, এমন অনেক ভাইরাসের মধ্যে যে কোনও একটি এমন মারণ রূপ ধারণ করতে পারে। কারণ প্রতিটি ভাইরাসই নিরন্তর মিউটেট করে চলেছে। সবকটি কিন্তু বিপজ্জনক নয়। কয়েকটি নিয়েই চিন্তা। বিংহাম জানান, বর্তমানে তাঁরা ২৫টি ভাইরাস পরিবারের গতিবিধি পরীক্ষা করছেন। এদের প্রতিটিতে হাজার হাজার ভাইরাস রয়েছে। যে কোন একটি থেকে পরের মহামারী শুরু হতে পারে।
এই ব্রিটিশ ভাইরাস বিশেষজ্ঞের কাছে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়টি হলো, ডিজিজ এক্সের ভয়াবহতা। তিনি জানান, কোভিডের থেকে অনেকটাই শক্তিশালী এবং সংক্রামক হওয়ায় ডিজিজ এক্সের কারণে মৃত্যুহার যে বহুলাংশে বাড়তে পারে। কোভিড আক্রান্ত অনেকেই পরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ডিজিজ-এক্সের ক্ষেত্রে ছবিটা এক নাও হতে পারে। কারণ এটি হামের মতো সংক্রামক, এর মৃত্যুহার ইবোলার মতো (৬৭ শতাংশ)।
কেট বিংহাম জানান, যদি পৃথিবীকে জিজিজ এক্সের হুমকি মোকাবেলা করতেই হয় তাহলে হাতে খুব বেশি একটা সময় পাওয়া যাবে না। কোভিডকালের তুলনায় অনেক দ্রুততম সময়ে কাজ করতে হবে সবাইকে। দ্রুততম সময়ে টিকা আবিস্কার করতে হবে। তারচেয়েও দ্রুত গোটা বিশ্বে টিকাকরণ কর্মসূচি নিতে হবে। না হলে মানবজাতির জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়ে নেমে আসার সম্ভানা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
কেন পৃথিবীতে মহামারীর সংখ্যা বাড়ছে, সে সম্পর্কেও ব্যাখ্যা দিয়েছে এই কেট বিংহাম। তিনি বলেন, এই সময়ে আমরা সবাই মিলে যে ধরনের আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি, সেটির মূল্য হিসাবেই মহামারীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। প্রথমত, আমরা বিশ্বায়নের কারণে একে অপরের কাছাকাছি হচ্ছি বেশি। দ্বিতীয়ত, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ শহরে প্রবেশ করছে, এতে একে অন্যের ঘনিষ্টতা বাড়ছে।
তিনি জানান, বন উজাড় করা, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি এবং জলাভূমি ধ্বংসের কারণে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে ভাইরাস। ফলে অনেক বেশি মিউটেড হবার সুযোগ পাচ্ছে ভাইরাস। মানুষের সঙ্গে বসবাস করা ভাইরাসের সংখ্যাও একই কারণে বাড়ছে, যা নতুন নতুন ভয়ংকর প্রজাতি তৈরি করছে। উল্লেখ, গেলো মে মাসে ডিজিজ-এক্স নিয়ে প্রথমবার দুনিয়াকে খবর দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.