11/23/2024 সমুদ্রের মাঝে ফ্রান্সের রহস্যে ভরা মঠ
মুনা নিউজ ডেস্ক
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:০৪
সমুদ্রতীরের কাছে এক দ্বীপের উপর মঠ। শুধু ভাটার সময়েই সেখানে পৌঁছানো যায়। ফ্রান্সের এই সৌধের টানে অনেক পর্যটক ভিড় করেন৷ প্রায় হাজার বছর পুরানো সেই অ্যাবির অনেক রহস্য আজো অজানা থেকে গেছে।
ফ্রান্সের মঁ স্যাঁ মিশেল মধ্যযুগের সবচেয়ে জটিল নির্মাণের অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত। আজও সেখানে পৌঁছানোর পথ অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে৷ তবে অক্ষত শরীরে একবার সেখানে পৌঁছতে পারলে অনেক রহস্য সমাধানের সুযোগ রয়েছে৷ আন ল্য পাজ নয় বছর ধরে মঁ স্যাঁ মিশেল অ্যাবির গাইডের কাজ করছেন৷
এই অ্যাবি চার্চের অর্ধেক রোমানেস্ক, বাকি অর্ধেক গথিক শৈলি অনুযায়ী তৈরি৷ আনাচেকানাচে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে৷ সবচেয়ে গভীর রহস্যগুলি আন্ পরে জানাবেন৷ সবার আগে তিনি একটি দরজার মধ্য দিয়ে দর্শনার্থীদের নিয়ে গেলেন৷
এই ‘ফ্লাইং বাট্রেস' গথিক নির্মাণশৈলির বৈশিষ্ট্য৷ সেগুলি বাইরের কাঠামো ধরে রাখে৷ একটি অংশ বিশেষ সুন্দরভাবে গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেটির আরো একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ আন ল্য পাজ বলেন, ‘‘এটি এক ফ্লাইয়িং বাট্রেসের উপর গড়ে তোলা হয়েছে, যা আসলে ঘোরানো সিঁড়ি৷ অনেকটা গ্র্যানাইটের মধ্যে লেসের কাজের মতো৷ মনে রাখতে হবে, সেই মধ্যযুগেই এটা তৈরি হয়েছে৷ আমরা প্রায় শীর্ষে পৌঁছে গেছি৷ এবার বামদিকে শুধু বেল টাওয়ার এবং শেষে একেবারে উপরে আর্চ্যাঙ্গেল স্যাঁ মিশেলে যাওয়া যায়৷ সেটিকে আবার সম্ভাব্য ঝড়ঝঞ্ঝা বা বজ্রপাত প্রতিরোধের লাইটনিং রড হিসেবেও কাজে লাগানো হয়৷ কারণ অতীতে এমন বিপর্যয়ের ফলেই বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷''
আজ যেখানে পর্যটকরা ছবি তুলতে ভিড় করেন, হাজার বছর আগে সেখানে বেনিডিক্টাইন সন্ন্যাসীরা বাস করতেন৷ মধ্যযুগেই হাজার হাজার তীর্থযাত্রী এই অ্যাব দর্শন করতে আসতেন৷ পর্যটকদের ভিড়ের মাঝে কি বোঝা যায়, যে আজো সন্নাসীরা সেখানে বাস করছেন?
আন জানালেন, ‘আসলে পাঁচ জন সন্নাসী ও সাত জন সন্নাসিনী, অর্থাৎ ১২ জন দিনে তিন বার প্রার্থনা করেন৷ ফরাসি সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়ার আওতায় এই সৌধে সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে৷ এর বদলে তাঁরা সেখানে থাকার সুযোগ পান৷ অবশ্যই ব্যক্তিগত স্তরে সেই ব্যবস্থা রয়েছে৷'
ভ্রমণের শেষে মঁ স্যাঁ মিশেলের সবচেয়ে কালো অধ্যায়ের দিকে নজর দেবার পালা৷ অত্যন্ত জঘন্য অপরাধীদের জন্য দুটি আইসোলেশন সেল এখনো সেখানে দেখা যায়৷ ফরাসি বিপ্লব থেকে শুরু করে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত সময়ে গোটা অ্যাবিটা কারাগার হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছে৷
আন ল্য পাজ বলেন, ‘‘সম্ভবত অনেক ঘণ্টা বা অনেক দিন ধরে থাকা বন্দিরাই খোদাই করে কিছু লিখেছে৷ কয়েকজন বন্দি তাদের কয়েক বছরের কষ্টের কথা বিভিন্ন জায়গায় লিখেছে৷ ভাবুন, এখানে থাকা কত ভয়ংকর ছিল৷''
অনেক শতাব্দী ধরে এই মঠ দ্বীপে যা ঘটেছে, তার অনেকটাই এখনো অজানা৷ গবেষণা চালিয়েও হয়তো অনেক তথ্য কখনোই জানা যাবে না৷ তাই মঁ স্যাঁ মিশেলকে ঘিরে আজও অনেক অনুমান ও কল্পনা দানা বাঁধছে৷
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.