11/22/2024 শিখ নেতা হত্যা : ভারতের জড়িত থাকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে কানাডা
মুনা নিউজ ডেস্ক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৪:২১
শিখ নেতা হরদিপ সিং নিজার হত্যায় ভারতীয় এজেন্ট জড়িত থাকার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে কানাডা। ১৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার কানাডা সরকারের একটি সিনিয়র সূত্র এ তথ্য দিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে কানাডার এই তদন্তে সমর্থন দেয়ার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সেখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, এ ইস্যুতে আমাদের কানাডিয়ান সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। অভিযোগ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি এ নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও উন্মুক্ত তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সরকারকে সেই তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।
উল্লেখ্য, গত ১৮ই জুন কানাডার বৃটিশ কলম্বিয়ায় ওই শিখ নেতাকে হত্যা করে অস্ত্রধারী অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি। এ নিয়ে কানাডা ও ভারতের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে বিষয়টি তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সোমবার তাদের উত্তেজনার বিষয়টি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন আহ্বান করে অভিযোগ করেন ওই শিখ নেতা হত্যায় নয়া দিল্লির এজেন্ট জড়িত এ বিষয়ে তার অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় একজন কূটনীতিককে ‘র’-এর এজেন্ট আখ্যায়িত করে তাকে বহিষ্কার করেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলোনি জোলি। ভারতও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। তারা কানাডার একজন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
এমন অবস্থায় কানাডা সরকারের ওই সূত্রটি রয়টার্সকে বলেছেন, বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা সহ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি আমরা। যেসব তথ্যপ্রমাণ কানাডার হাতে এসেছে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় শেয়ার করা হবে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে ওই সূত্রটি নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। মঙ্গলবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনে এ ঘটনার পরিণতি সুদূরপ্রসারি। তিনি বিষয়টিকে গুরত্ব দিয়ে দেখতে এবং কানাডাকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তে সহায়তা করার আহ্বান জানান। তবে তার এ অভিযোগকে দ্রুততার সঙ্গে ভারত উদ্ভট বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা পাল্টা কানাডার একজন কূটনীতিককে ৫ দিনের মধ্যে ভারত ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
বছরের পর বছর ধরে এ দুটি দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু শিখ নেতা হত্যাকে কেন্দ্র করে তা এখন উত্তেজনায় পরিণত হয়েছে। কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কর্মকাণ্ডে নয়া দিল্লি অখুশি। কারণ, শিখরা ভারতের পাঞ্জাবে তাদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছে। শিখদের দৃষ্টিতে এটা স্বাধীনতা আন্দোলন। আর ভারতের চোখে তা বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। স্বাভাবিকভাবেই শিখদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে ভারত। কানাডায় বসবাস করেন শিখ সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ। সেখানে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন হরদিপ সিং নিজার।
এখন কানাডা ও ভারতের মধ্যে যে বিরোধ বা উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তার সমাধান কিভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রফেসর এবং জাস্টিন ট্রুডোর সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা রোল্যান্ড প্যারিস বলেন, এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক আলোচনা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আমার মনে হয়।
সূত্র : রয়টার্স
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.