11/22/2024 হিজাব পরে ৩১ বছর যাবৎ নাসায় কাজ করছেন যেই মুসলিম নারী
মুনা নিউজ ডেস্ক
১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:১২
৩১ বছর যাবৎ নাসায় কাজ করছেন ড. তাহানি আমের নামে মিসরীয় বংশোদ্ভূত একজন মহাকাশ প্রকৌশলী। তিনি চার সন্তানের মা। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের নির্বাহী পরিচালক পদে তিনি দায়িত্বরত। কর্মক্ষেত্রের বাইরে তিনি জনসাধারণকে ইসলাম বুঝতে সহায়তা করেন।
বিয়ের পর ১৯৮৩ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে আমেরিকা পাড়ি জমান ড. তাহানি। বাবার অনুপ্রেরণায় বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এরপর যান্ত্রিক প্রকৌশলে স্নাতক এবং মহাকাশ প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি ভার্জিনিয়ার ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
মুসলিম এই নারী নাসায় কাজ শুরু করেন ১৯৯২ সালে। সেখানে কম্পিউটেশনাল ফ্লুইড ডাইনামিকস প্রজেক্ট (সিএফডি) নামে তার একটি প্রকল্প ছিল। ২০১৪ সালে বিজ্ঞানে নারী ও সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ প্রচারের জন্য নাসার পক্ষ থেকে পাবলিক সার্ভিস পুরস্কার লাভ করেন।
কর্মক্ষেত্রে হিজাব পরার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তাহানি বলেছেন, নাসায় বহু মুসলিম কাজ করলেও কখনো কোনো হিজাবি নারীকে দেখিনি। আজও এখানে হিজাব সবার পছন্দের হয়ে ওঠেনি। একজন হিজাবি নারী কর্মী হিসেবে নিজের মধ্যে অন্য রকম অনুভূতি অনুভব করি। তবে চাকরিজীবনে কখনো হিজাবের বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা করিনি। হিজাব পরা ইসলামী শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। বরং সব সময় ধর্মীয় নির্দেশনা মেনে চলেছি আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি বলেন, ১/১১-এর সময় অনেকে আমার হিজাব নিয়ে কথা বলেছিল। তাদের যুক্তি ছিল, কষ্ট থেকে বাঁচতে হিজাব খোলার বিধান রয়েছে। তাদের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে আমি আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে মনোযোগী হই। কেননা জীবনের সর্বত্র তাঁর নির্দেশনাকে প্রাধান্য দিতে হবে। অবশ্য অন্যদের পরামর্শে হিজাব খোলার বদলে আমি হিজাব পরেই সব কাজ করেছি।
মুসলিম নারীর সামাজিক ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, একজন শিক্ষিত মুসলিম নারী হিসেবে আমার কর্তব্য রয়েছে। তাই স্থানীয় মসজিদে সাপ্তাহিক পাঠদানের পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে কাজ করি। সমাজের সদস্যদের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে এ কার্যক্রম বেশ সহায়ক। পরিবার, মাতৃত্ব ও কাজের পেশাদারির মধ্যে সমন্বয় সাফল্যের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। আমার সন্তান জন্ম নেওয়ার পরও আমি নিজের কাজ অব্যাহত রাখি। আমি নিজের ঘরকে কর্মক্ষেত্রে রূপান্তরিত করি এবং তার দেখাশোনা করি। এ সময় কয়েকজন সহকর্মীও আমার সঙ্গে ঘরে কাজ করেছিলেন, যা জীবনের সুখকর স্মৃতিগুলোর একটি হয়ে রয়েছে। আমি সন্তানদের সব ধরনের কাজে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলছি, যেন তারা জীবনের সব ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
ড. তাহানি আমির ভার্জিনিয়ার ইসলামিক সেন্টার অব হ্যাম্পটন মসজিদে শিশু ও নারীদের জন্য পবিত্র কুরআন শিক্ষা ও আরবি ভাষার পাঠদান করেন। তা ছাড়া আমেরিকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরেন।
সূত্র : আলজাজিরা
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.