11/22/2024 সৌদি সীমান্তে শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশীকে হত্যার অভিযোগ
মুনা নিউজ ডেস্ক
২১ আগস্ট ২০২৩ ১০:০০
সৌদি সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেন সীমান্তে কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন পাড়ি দিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টাকালে শত শত মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অনেকেই ইথিওপিয়ান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) মতে, পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে এটিকে তারা ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এইচআরডব্লিউ প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উন্নত জীবনের আশায় ইয়েমেন পাড়ি দিয়ে সৌদি পৌঁছানোর চেষ্টার সময় সীমান্তে কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ইথিওপিয়ার নাগরিক।
‘দে ফায়ারড অন আস লাইক রেইন’ (ওরা আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি করেছিল) শিরোনামে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। সাক্ষাৎকারদাতাদের দাবি, ইয়েমেনের উত্তর সীমান্তে তাদের ওপর গুলি ও বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে সৌদি পুলিশ এবং সৈন্যরা।
এইচআরডব্লিউকে তারা জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে ইয়েমেনের উত্তর সীমান্তে সৌদি পুলিশ ও সৈন্যরা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়েছে। এছাড়া বিস্ফোরক অস্ত্র দিয়েও আঘাত করেছে। গুলিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শরীরের ছিন্নভিন্ন অংশ ও মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন তারা।
সৌদি সরকার বলছে, তারা অভিযোগগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখছে। তবে হত্যাকাণ্ডগুলো পরিকল্পিত বা বড় আকারের ছিল- জাতিসংঘের এমন মতকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি। এর আগেও পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল সৌদি আরব।
গত বছরের জুলাই মাসে সৌদি প্রবেশের চেষ্টার সময় গুলির মুখে পড়েছিল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি দল। এতে অন্তত ৪৫ জন প্রাণ হারান। তবে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যান সৌফিয়া।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, পথিমধ্যে এদের অনেকেই কারাভোগ ও মারধরের শিকার হন। তাছাড়া সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার বিপদও কম নয়। গত সপ্তাহেই জিবুতি উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ২৪ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছেন। তবে এত বাধা পেরিয়ে স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি যারা পৌঁছান, তারা সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির মুখে পড়েন বলে অভিযোগ করেছে এইচআরডব্লিউ।
সংস্থাটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের প্রধান লেখক নাদিয়া হার্ডম্যান বলেছেন, আমরা সেখানে যা নথিভুক্ত করেছি, তা মূলত গণহত্যা। আমি শত শত গ্রাফিক ইমেজ এবং ভিডিও দেখেছি, যা বেঁচে যাওয়ার মানুষেরা আমার কাছে পাঠিয়েছিল। সেগুলোতে ভয়ংকর আঘাত এবং বিস্ফোরণের ক্ষত দেখা গেছে।
তবে লেখকরা বলছেন, সীমান্ত ক্রসিংয়ের দূরত্ব এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা কঠিন হওয়ায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন তা নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
হার্ডম্যান বলেন, আমরা সর্বনিম্ন ৬৫৫ জনের কথা বলতে পারি, তবে এর সংখ্যা কয়েক হাজারও হতে পারে। তার ভাষ্যমতে, আমরা প্রমাণ করেছি যে, নির্যাতনগুলো ব্যাপক ও পদ্ধতিগত এবং এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের তুল্য হতে পারে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিবিসি প্রমাণ পেয়েছে, সৌদি সীমান্তে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.