11/22/2024 ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ হেনস্থায় ফের ফ্লয়েডের ছায়া
মুনা নিউজ ডেস্ক
৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:০৫
২০২০ সালের ২৫ মে মিনিয়াপলিসে ঘটা সেই হত্যার মতোই ফের কৃষ্ণাঙ্গ এক মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল ক্যালিফোর্নিয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ জুন। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে ঘটনাটির ভিডিয়ো, তার পরেই সমাজমাধ্যম জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়। নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও।
ঘটনাটি ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ল্যাঙ্কাস্টার এলাকার একটি দোকানের সামনে ঘটেছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, দোকানের সামনে এক জন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে হাতকড়া পরাচ্ছেন দুই পুলিশ অফিসার। কালো টি-শার্ট পরা এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা পুরো ঘটনাটি ফোনে রেকর্ড করছেন। একটা সময় হঠাৎ করেই সেই মহিলার দিকে ছুটে যান দুই অফিসার। হাত থেকে ফোন কেড়ে মাটিতে চেপে ধরেন তাঁকে। মহিলা ছটফট করলে তাঁর মুখে পেপার স্প্রে করে দেওয়া হয়।একসময় নিস্তেজ হয়ে পড়েন ওই মহিলা। সম্পূর্ণ ঘটনাটির ভিডিয়ো রেকর্ডিং যিনি করেছেন, তিনি ওই দোকানেরই এক কর্মচারী। মহিলাকে যখন মাটিতে চেপে ধরা হয় তখন তিনিও চিৎকার করে থামতে বলেছিলেন। তিনি এ-ও জানান, এক সময় শোনা যাচ্ছিল মহিলার কাতর আকুতি— ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ ঠিক যেন ফ্লয়েডেরই কাতরোক্তির রেশ।
ওই দুই পুলিশ অফিসারের দাবি, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি ওই মহিলার স্বামী। তাঁদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনেছেন দোকান কর্তৃপক্ষ। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। যদিও সেই সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভিডিয়োয় বরং শোনা গিয়েছে, হাতকড়া পরা ব্যক্তি পুলিশকে অনুরোধ করছেন মহিলাকে হেনস্থা না করতে। বারবার বলছেন, তাঁর ক্যানসার রয়েছে। পুলিশ তাতে কর্ণপাতও করছে না। নেট-নাগরিকদের একাংশের প্রশ্ন, স্রেফ অশ্বেতাঙ্গ বলেই কি মিথ্যা চুরির অপবাদে হেনস্থার শিকার হলেন দু’জন?
ঘটনাটি এ ভাবে প্রকাশ পাওয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির শেরিফের দফতর বেশ অস্বস্তিতে। তাদের তরফে তড়িঘড়ি প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। ওই দুই অফিসারকে আপাতত ফিল্ড ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত। শেরিফ নিজে জানিয়েছেন, প্রত্যেক নাগরিকের সঙ্গে যথাযথ ভাবে সম্মানের সঙ্গে আচরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকর্মীদের।
আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের হেনস্থার একাধিক ঘটনা রয়েছে। ফ্লয়েড-হত্যার ঠিক দু’মাস আগে এক দল শ্বেতাঙ্গ পুলিশ মাটিতে চেপে ধরে, শ্বাসরোধ করে মেরেছিল এডওয়ার্ড ব্রনস্টাইনকে। সমাজতত্ত্ববিদদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বৈষম্যই এর অন্যতম কারণ। প্রসঙ্গত, জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর তিন বছর পরে ২০২৩ সালে পুলিশ বিভাগে সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয় আমেরিকার মিনিয়াপলিসে। মানবাধিকার কমিশন ফ্লয়েড হত্যার পরে পুলিশ বিভাগে একটি সমীক্ষা শুরু করেছিল। সম্প্রতি তার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পুলিশ বিভাগের মধ্যে বর্ণবিদ্বেষ রয়েছে। মিনিয়াপলিসের মেয়রজেকব ফ্রে জানিয়েছেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা ভবিষ্যতের জন্য পদক্ষেপ করবেন।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.