12/19/2025 ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ: হোয়াইট হাউস
Akhlakuzzaman
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৫৭
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলারের বিতর্কিত ‘তেল চুরি’ মন্তব্যে ওয়াশিংটন-কারাকাস সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকছে। মিলার দাবি করেছেন, ভেনেজুয়েলার তেল আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে স্টিফেন মিলার এসব কথা বলেন। আর তার এই মন্তব্যে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উত্তেজনার পেছনে মাদক পাচারই যে মূল কারণ— ট্রাম্প প্রশাসনের সেই দাবি আরও প্রশ্নের মুখে পড়ছে। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার লেখেন, ‘আমেরিকানদের ঘাম, মেধা ও শ্রম দিয়েই ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প গড়ে উঠেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই শিল্পের জবরদখল ছিল আমেরিকার সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুরি। পরে এই লুট করা সম্পদ সন্ত্রাসে অর্থ জোগাতে এবং খুনি, ভাড়াটে যোদ্ধা ও মাদক আমাদের রাস্তায় ছড়িয়ে দিতে ব্যবহার করা হয়েছে।’
তবে আন্তর্জাতিক আইনের ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতিমতে ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে থাকা তেল ওই দেশেরই সম্পদ। যদিও শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকটি কোম্পানি সেখানে তেল অনুসন্ধানে যুক্ত ছিল।
আল জাজিরা বলছে, ভেনেজুয়েলা ১৯৭৬ সালে তেলখাত জাতীয়করণ করে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পিডিভিএসএ’র অধীনে নিয়ে আসে। পরে ২০০৭ সালে তৎকালীন বামপন্থি প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ বাকি বিদেশি তেল প্রকল্পগুলোও জাতীয়করণ করেন। এর ফলে কনোকোফিলিপস ও এক্সন মোবিলের মতো তেল জায়ান্টদের কার্যত দেশ ছাড়তে হয়।
এই জাতীয়করণের বিরুদ্ধে কোম্পানিগুলো আইনি লড়াই শুরু করে। ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের এক সালিশি ট্রাইব্যুনাল এক্সন মোবিলকে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে ভেনেজুয়েলাকে নির্দেশ দেয়। বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া এখনও চলমান।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র পিডিভিএসএ’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতিকে আরও জোরদার করেছেন ট্রাম্প।
এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর অবরোধ আরোপের ঘোষণা দেন এবং সেগুলোকে ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ বলে উল্লেখ করেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি মিলারের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের তেল চুরি করেছে।’
ট্রাম্প লেখেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ভেনেজুয়েলাকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বহর আরও বড় হবে, আর যে ধাক্কা তারা পাবে, তা আগে কখনও দেখেনি— যতক্ষণ না তারা আমাদের কাছ থেকে চুরি করা সব তেল, জমি ও অন্যান্য সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে দেয়।’
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.